১৫ আগস্ট উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হেনস্তার শিকার ওই ব্যক্তি হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঘটনা সত্য নয়। তার মৃত্যুর কথা নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে নানা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছোট ছেলে সিরাজ উল কুদ্দুস ইমরান। হেনস্থার স্বীকার ওই ব্যক্তির নাম আব্দুল কুদ্দুস মাখন। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার নারায়নখোলা এলাকায়। তার বাবার নাম আব্দুল হাই।
এই গুজবকে উড়িয়ে দিয়ে তার বড় ছেলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টে তিনি বলেন, ভিডিওতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন, উনার নাম আব্দুল কুদ্দুছ মাখন। আমি উনার বড়ো ছেলে সিরাজ উল কুদ্দুছ ইমরান। উনি মারা যায় নাই। জীবিত আছেন, মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন। এই ভিডিও করার পর তাকে বেধে বেধড়ক পিটিয়ে তার মোবাইল টাকা সব নিয়ে গেছেন। আমাদের বাসায় তার চিকিৎসা চলছে। এখন আপনাদের যদি মনে হয় তাকে মেরে ফেলবেন তাহলে বাসায় আসতে পারেন। আমাদের সবাইকে মেরে ফেলতে পারেন। আমাদের পরিবারের সবাই মরার জন্য প্রস্তুত। তার অপরাধ কি ছিলো জানেন? স্বধীনতার সময় তার, তার বাবার, তার বোনের অংশগ্রহণ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে মিথ্যা মামলায় ৭ মাস ২৪ দিন জেল খাটা, তার অন্য অপরাধ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া, কালো পাঞ্জাবি পরিধান করা এবং বাংলাদেশের পতাকার টুপি পরিধান করা (একটা কথা আপনাদের অবগতির জন্য বলে রাখা ভালো উনার মুক্তিযোদ্ধা সনদ এর জন্য উনি কখনো চেষ্টাই করেন নাই, কারণ আমার বাবা সার্টিফিকেটের জন্য অংশগ্রহণ করেন নাই)। এই যদি তার অপরাধ হয় তাহলে রাষ্ট্র আমাদের পুরো পরিবার কে ফাঁসি দিতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবার সাথে এই জঘন্য কাজের পরেও আমাদের দেশের মানুষ থেমে যায় নাই। আমাদের গ্রামের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। আমার মেঝো চাচাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে তাকে জবাই করবে। এই সমাজ বা রাষ্ট্রের আছে আর বিচার চাওয়ার কিছু নাই। লাভও হবে না। জাতি হিসেবে আমি লজ্জিত। বাঙালি জাতি হিসেবে নিজেকে হয়তো কখনো পরিচয় দিতে পারবো না। যারা আমাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন, আব্বা কিছুটা সুস্থ হলে আমি আপনাদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিবো। তবে অন্য কারো বাবার সাথে যেনো এমন অন্যায় না হয় আপনাদের কাছে এই অনুরোধ রইলো। আমার বাবার মতো অনেকেই আছেন যারা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন, কারন তারা ’৭১ দেখেছেন। এই অপরাধের জন্য দয়া করে আর কাউকে লাঞ্ছিত করবেন না প্লিজ।
এ বিষয়ে তার ভাগ্নে মো. আল আমিন বলেন, তিনি একজন সম্মানিত পরিবারের সন্তান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। আজকের এই ঘটনার পর তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। বর্তমানে তিনি বাসাতেই আছেন। অন্যান্য ঔষধের পাশাপাশি ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন ঘুমিয়ে আছেন।
জানা যায়, আব্দুল কুদ্দুস মাখন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বরেণ্য রাজনীতিবিদ কৃষিবিদ বদিউজ্জামাম বাদশার একান্ত সহচর ছিলেন। তার ফেসবুক আইডিতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সে বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শেরপুর জেলা সমিতির সহ-সভাপতি। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
মন্তব্য করুন