কুমিল্লা মেঘনা উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নবজাতক জন্মের পর মায়ের পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়মা রহমানের কাছে ওই হাসপাতাল এবং চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী গৃহবধূ লিজা আক্তারের স্বামী মো. আলমগীর হোসেন এ অভিযোগ করেন।
মো. আলমগীর হোসেন ও লিজা আক্তার দম্পতির বাড়ি উপজেলার মানিকারচর গ্রামে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর মানিকারচরের নিউ আল শেফা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অন্তঃসত্ত্বা নারী লিজা আক্তারের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছেলের জন্ম হয়। অস্ত্রোপচার শেষে ভুলে লিজার পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় একপর্যায়ে তার পেট ফুলে যায়। স্বজনেরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক দেখানোর পর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কথা বলেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে ছাড়পত্র দিয়ে রোগীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাড়ি যাওয়ার কিছুদিন পর তার আবার পেটে ব্যথা শুরু হয়। স্বজনেরা গৃহবধূকে একই হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা রোগীর আগের ব্যবস্থাপত্র রেখে নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ লিখে দেন। রোগী বাড়ি ফেরার পর পেটব্যথা ফের বেড়ে যায়। পেট থেকে পুঁজ পড়া শুরু হয়। প্রায় ১৯ মাস পর গত সোমবার স্বজনেরা গৃহবধূ লিজাকে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অস্ত্রোপচার করে গৃহবধূর পেট থেকে গজ ও ব্যান্ডেজ বের করা হয়।
এ বিষয়ে আলমগীর হোসেন বলেন, একাধিকবার তার স্ত্রীর অস্ত্রোপচার ও ওষুধ বাবদ এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। স্ত্রী অসুস্থ থাকায় সেবা-যত্নের অভাবে তাদের ১৯ মাস বয়সী একমাত্র ছেলেটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। তিনি একজন মুদিদোকানি। স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে দোকানটিও চালাতে পারেননি। ফলে আর্থিকভাবেও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি প্রশাসন ও সরকারের কাছে সঠিক বিচার ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ চান।
মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়মা রহমান এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।