বগুড়া শহরের সুবিল উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসতিক হাসান (১৩) গত ১০ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত ৪ আগস্ট সকালে বাসা থেকে বের হলেও আর বাসায় ফেরেনি। তার পরিবার দাবি করেছে বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে নিখোঁজ হয় স্কুলছাত্র ইয়াসতিক হাসান।
ছেলের সন্ধান পেতে মা-বাবা হাসপাতালের মর্গ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ঘুরছেন। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় গত রোববার থানার কার্যক্রম শুরু হলে তার বাবা জিডি করেন।
বগুড়া সদরের নামুজা পাল্লাপাড়া এলাকার রিকশাচালক মোশারফ হোসেনের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ইয়াসতিক। ছোট মেয়ে মাসরুফা বগুড়া শহরের ফুলবাড়ি এলাকায় ফ্লাওয়ার হ্যাভেন স্কুলে নার্সারিতে পড়ে। ছেলেমেয়েকে ভালো স্কুলে লেখাপড়া করাতে গ্রাম ছেড়ে শহরের বৃন্দাবনপাড়া এলাকায় টিনশেডের বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন মোশারফ। রিকশা চালিয়ে দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালান।
বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘কাউকে না জানিয়ে ইয়াসতিক ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিত। কোনো দিন সকালে আবার কোনো দিন দুপুরে বাসা থেকে বের হয়ে সে সন্ধ্যায় ফিরত। ইয়াসতিকের নানার বাড়ি স্কুলের পাশে ফুলবাড়ি এলাকায়। সে প্রায়ই নানার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যেত ও সন্ধ্যার আগে ফিরে আসত। প্রথম দিকে আমরা বুঝতে পারিনি সে কোথায় যায়। পরে সহপাঠীদের কাছ থেকে জানতে পারি ইয়াসতিক ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে যোগ দিত।’
ইয়াসতিকের মা ইয়াসমিন বেগম সন্তানকে না পেয়ে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। ইয়াসমিন বেগম বলেন, ‘ইয়াসতিক জেদি প্রকৃতির ছিল। ছাত্র আন্দোলনের সময় না জানিয়ে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল। প্রতিদিনের মতো ওই দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। রাত থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি, হাসপাতাল মর্গসহ র্যাব অফিসে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাইনি।’
এদিকে আন্দোলন পরবর্তী সময়ে থানা পুলিশের কার্যক্রম না থাকায় জিডি করতে পারেননি ইয়াসতিকের বাবা। তবে গত রোববার থানার কার্যক্রম শুরু হলে তিনি জিডি করেন। বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লা বলেন, নিখোঁজের বিষয়টি জানার পর ইয়াসতিকের অনুসন্ধান তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন