রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) বদলি করতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (রংপুর) এ বি এম জাকির হোসেন জানান, গতকাল রোববার (১১ আগস্ট) রাতে পুলিশ হেডকোর্টার থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে। সেই নির্দেশনা রংপুর মহানগর পুলিশ ও আমরা পেয়েছি। মামলা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। মঙ্গলবার হয়তো তা পেয়ে যাবো।
জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেটে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ত্রিমুখি সংঘর্ষ হয়। সেখানে পুলিশের গুলিতেই আবু সাঈদ নিহত হন। এ ঘটনায় ১৭ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতিভূষণ রায় বাদি হয়ে একটি মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন বেলা ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ছাত্র নামধারী সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ও তাদের নিকটে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হতে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির ভেতর থেকে সরকারি ইস্যুকৃত শটগান হইতে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সহপাঠীরা ধরাধরি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের এমন বয়ানে, বিক্ষুব্ধ হন আন্দোলনকারী ও রংপুরের সুশিল সমাজ। দেশজুড়ে নেতিবাচক আলোচনা শুরু হয়।
সুজন রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, সারা পৃথিবীই দেখলো পুলিশ আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করলো, আবার তারাই মামলার নাটক সাজিয়ে আন্দোলকারীদের আসামী করলো। এটা পুলিশের কান্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ড। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করি আমরা। আমরা চাই এই ঘটনায় যারাই দায়ি থাকুক তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এদিকে, আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন জানিয়েছেন, তারা আবু সাঈদ হত্যার বিচার চান। সুষ্ঠু বিচারে যারা দায়ী তাদের আইনের আওতায় আনার দাবী করে বলেন, ‘কোটে তদন্ত হয় হোক, যারা গুলি করছে তাদের বিচার চাই’।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবু সাঈদ হত্যা মামলা করতে গেছিলাম। কিন্তু আমাদের মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি।
মন্তব্য করুন