পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম ও তার বড় ভাই পিরোজপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি মহিউদ্দিন মহারাজের বাড়ি, গোডাউন ও অফিসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেদিন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় সেদিন বিকেলে অন্যান্য এলাকার মতো ভান্ডারিয়াতেও অগ্নিকাণ্ড, ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ৫ আগস্ট দুপুরে গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরপরই ভান্ডারিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টি-জেপির নেতাকর্মীরা প্রথমে শহরের রিজার্ভ পুকুর পাড়ে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা করে। এসময় জাতীয় পার্টি-জেপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা শামজিদ মিয়া, মামুন সরদার, মাসুদ সরদার, সোহেল ও মঞ্জুর সরদার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এরপরই সেখান থেকে কয়েকশ মিটার দূরে ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের সামনে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে দুই দফায় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টি-জেপি নেতা শামজিদ মিয়া, মামুন সরদার, মাসুদ সরদার, সোহেল ও মঞ্জুর সরদারকে সেখানেও লুটপাট ও আগুন দেওয়ার নেতৃত্বে দেখা যায়।
সেখানেই সেদিন ক্ষ্যান্ত হয়নি এসব সন্ত্রাসীরা। আওয়ামী লীগ অফিস ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনে আগুন ও লুটপাটের পর তারা হামলা করে মহিউদ্দিন মহারাজ ও মিরাজুল ইসলামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। ভান্ডারিয়া থানার পাশেই অবস্থিত তাদের রড সিমেন্টের গোডাউন ও অফিসে হামলা করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসময় অফিস ও গোডাউনে থাকা রড সিমেন্ট এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র জাতীয় পার্টি-জেপির নেতাকর্মীরা লুট করে নিয়ে যায়।
এখানে উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টি-জেপির নেতাকর্মীরা যখন ভান্ডারিয়াজুড়ে এসব সহিংসতা ও লুটপাট চালাচ্ছিল তখন ভান্ডারিয়ার বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন এলাকা ও শহীদ মিনারে নিজেদের মতো করে আনন্দ উদযাপনে জড়ো হন। এ ছাড়া ওই সময় বিএনপি-জামায়াত ও সাধারণ মানুষ চলমান ছাত্র অভ্যুথানে যারা নিহত হয়েছে তাদের স্মরণে ভান্ডারিয়া বাসস্ট্যান্ডে গায়েবানা জানাজায় অংশ নিতে দেখা যায়।
বিষয়টি নিয়ে ভান্ডারিয়ায় গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, মূলত মিরাজুল ইসলাম ও মহীউদ্দীন মহারাজের ঘর বাড়িতে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টি-জেপির নেতাকর্মীরা বিএনপি-জামায়াতের ওপর দোষ দিতে চেয়েছিল।
সাধারণ মানুষ বলছেন, জাতীয় পার্টি-জেপি গত কয়েক দশক ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের মহাজোটে থেকে মন্ত্রীত্বসহ নানা রাষ্ট্রীয় ও সরকারি সুযোগ সুবিধা নিয়েছে। অথচ তারাই আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দিল। এ ঘটনার পর ভান্ডারিয়ায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন।
মন্তব্য করুন