কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৪, ০১:২০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাগরে মিলছে না ইলিশ, জেলেদের কপালে চিন্তার ভাঁজ

জেলেদের জালে ধরা পড়া ইলিশ। ছবি : কালবেলা
জেলেদের জালে ধরা পড়া ইলিশ। ছবি : কালবেলা

জেলেদের আশা ছিল বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাবে। কিন্তু ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা গত ২৩ জুলাই মধ্যরাতে শেষ হলেও নদ-নদী ও সাগরে তেমন ইলিশ ধরা পড়ছে না। কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা না পেয়ে হতাশ জেলেরা।

ইলিশের ভরা মৌসুমেও উপকূলীয় কুয়াকাটা জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না রুপালি ইলিশ। একদম ইলিশ শূন্য জেলেরা। দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না এখানকার জেলেদের।

একদিকে ডিজেল ও মুদি মালামালের দাম বেড়েছে, অন্যদিকে ট্রলার সাগরে গিয়ে মাছ ছাড়াই ফিরে আসছে। সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া প্রত্যেক জেলের পেছনে অনেক খরচ হয়। নিষেধাজ্ঞা শেষে ট্রলার নিয়ে সাগরে যাওয়ার পর থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হয়েছে। আড়তদারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা দাদন নিয়েছেন। কিন্তু মাছ না পাওয়ায় সে টাকা শোধ করবেন কীভাবে, তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কপালে। এমন চলতে থাকলে পেশা বদলে ফেলতে পারেন অনেকে।

উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার নিবন্ধন করা জেলের সংখ্যা ১৮ হাজার ৩০৫ জন ও রাঙ্গাবালী ৫টি ইউনিয়নের ১৩ হাজার ৮৪৭ জন নিবন্ধিত জেলেসহ প্রায় ২০ হাজার জেলে হতাশায় রয়েছেন।

একদিকে ঋণ সংকট, অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশ না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ৩৭ শতাংশ জেলে। শুধু জীবিকার তাগিদেই নয় প্রতি মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকার করে অর্থনীতির চাকা সচল করছেন পেশাদার জেলেরা। উত্তাল সাগর ও বন্যার সময় জীবনযুদ্ধে হার না মানা এসব সাহসী আত্মনির্ভরশীল মানুষ নির্ধারিত সময়ে কাঙ্ক্ষিত মৎস্য আহরণের লক্ষ্যে ছুটে যায় গভীর সমুদ্রসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে। এ সময় উওাল সাগরে ট্রলার ডুবে গেলে কারও কারও খোঁজ স্বজনরা পেলেও অনেকেরই সলিলসমাধি হয়েছে সাগরে।

উপজেলার আলীপুর, মহিপুর, লালুয়া, কুয়াকাটা ধুলাসার, ধানখানখালী, বাবলাতলার ঢোস, নিজামপুর, গঙ্গামতি, জেলে পল্লি ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বললে তারা তাদের দুর্দশার কথা জানায়।

গঙ্গামতির গ্রামে জেলে আলী হেসেন বলেন, তিনটা বছর হইছে তেমন মাছ ভালো পড়ে না। এতে মোগো মেরুদণ্ড ভাইঙা ফালাইছে। আবার ২২ দিনের ইলিশের অবরোধ নিষেধাজ্ঞা, আট মাসের জাটকা ধরা অবরোধ। এখন গাঙে ও সাগরেও তেমন মাছ পোনা নাই।

লালুয়ার চারিপাড়া গ্রামে জেলে মাসুদ বলেন, এই এলাকার ৯০ শতাংশ মানুষ মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন তিনবেলা খাবার জোগার করতে কষ্ট হচ্ছে।

এফবি মায়ের দোয়া মাঝি মো. কালাম হোসেন জানান, দুই দিন আগে ১৫ জন জেলে নিয়ে সাগরে মাছ শিকারের জন্য যান। কিন্তু সাগরে উত্তাল ঢেউ থাকার কারণে শিববাড়ীয়া নদীর নোঙর করে আছেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে আশা করা হচ্ছিল, জেলেরা প্রচুর ইলিশ নিয়ে ফিরবেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে তাদের ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে ট্রলারের মালিক ও জেলেদের। আবহাওয়া ভালো হলে জেলেরা সমুদ্রে আশানুরূপ মাছ পেলে অর্থনৈতিক দুর্দশা-দৈন্য কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তিন কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ৫

দাবানলে ৬০ লাখের বেশি মানুষ মারাত্মক ঝুঁকিতে

সরাইলে বিএনপির নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল

মানিকগঞ্জে নিজ বাড়িতে নারীকে গলা কেটে হত্যা 

ভৈরবে আ.লীগ কার্যালয় থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

আন্দোলন-ধর্মঘটে ‘কার্যত অচল’ রাবি, ব্যাহত শিক্ষার পরিবেশ

রাজবাড়ীতে জমি বন্ধক নিয়ে গাঁজা চাষ, চাষি আটক

টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ তদন্ত প্রতিবেদনে যা ছিল

নারী উদ্যোক্তা তনির স্বামী মারা গেছেন

ভারত থেকে এলো ২৪৫০ টন চাল

১০

নারায়ণগঞ্জে আগুনে পুড়ল দুই কারখানা

১১

উপসচিব বিতর্ক এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্যের বাস্তবতা 

১২

কিশোরগঞ্জে হাসপাতালে ভুল ইনজেকশনে ২ রোগীর মৃত্যু

১৩

আবারও আসছে শৈত্যপ্রবাহ

১৪

দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে শক্তিশালী মালদ্বীপের পাসপোর্ট

১৫

কুয়াশা ও তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তা

১৬

দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন দাবানলকে ভয়াবহ করছে আরও

১৭

ধুম ৪-এ রণবীর

১৮

আমি কারাগারে বৈষম্যের শিকার : পলক

১৯

পয়েন্ট হারানোর পর গোলকিপারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন গার্দিওলা

২০
X