গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তা কর্মীদের গুলিতে ৬ বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন মৌলভীবাজারের রামেশ্বরপুর গ্রামের মকবুল মিয়ার ছেলে ইমতিয়াজ পাভেল (২৪) , টাঙ্গাইলের তামটিয়া গ্রামের রাজ্জাক শেখের ছেলে স্বপন শেখ (৪০), সুনামগঞ্জের জলোশা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আয়াতুল্লাহ (১৯), নরসিংদীর নলভাটা গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে মো. জিন্নাহ (২৮), নওগাঁ জেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে আসলাম হোসেন মোহন ( ২৬) ও রইস উদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন (৬৩)।
সুব্রত কুমার বালা জানান, মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দিরা বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের সময় বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিরা দেয়াল ভেঙ্গে, দেয়াল টপকে ও দেয়ালে সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হলে সেনাবাহিনী কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন। এক পর্যায়ে বন্দীদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে। এ সময় সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তাকর্মীরা বাঁধা দেওয়ার পরও তারা না থামায় নিরাপত্তা কর্মীরা গুলি করেন। গুলিতে কারাবন্দি ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নিহত ইমতিয়াজ পাভেল হত্যা মামলা, স্বপন শেখ ছিনতাই, আসলাম হোসেন মোহন হলি আর্টিজানের ঘটনায় ও আফজাল হোসেন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে বন্দি ছিলেন।
নিহতদের স্বজনরা জানান, আড়াইটার দিকে কারাগার থেকে মোবাইল ফোনে জানানো হয়- গুলিতে কারাগারে বন্দি তাদের আত্মীয় মারা গেছেন। এরপর কারা ফটকে অপেক্ষার পর জানতে পারেন মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এরপর হাসপাতালে এসে গুলিবিদ্ধ মরদেহ সনাক্ত করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোস্তাক আহমেদ বলেন , রাত ৩টা ৪০ মিনিটে কারা হাসপাতালের কর্মকর্তা আব্দুর রহিমের তত্ত্বাবধানে ছয় জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়। রাত থাকায় ওই সময় তাদের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা যায়নি। সকালে তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা বাঁধা দেয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। পরে জেলা প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে বিনা ময়নাতদন্তে ছয় জনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মন্তব্য করুন