ঝিনাইদহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় সদর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরণসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলে শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায় বিক্ষুব্ধরা সদর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণের বাড়ি ঘেরাও করতে যায়। এ সময় তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি করা হয়। এতে ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হন। পরে ওই বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগ নেতার গাড়িচালক আক্তার হোসেনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আক্তারের বাড়ি সদর উপজেলার পোড়াহাটী ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে। এ ছাড়া আগুনে শহিদুল ইসলাম হিরনসহ আরও ৪ জন নিহত হন। বিক্ষুব্ধ জনতা হিরনের লাশ ভ্যানে করে শহরের প্রাণকেন্দ্র পায়রা চত্বরে নিয়ে যায়। অন্যদের লাশ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা হিরনের ছোড়া গুলিতে আরাপপুরের ইমরান হোসেন, আইয়ুব হোসেন, চাপড়ি গ্রামের রাকিবুল হোসেন, রায়হান উদ্দীন, বেলেডাঙ্গা গ্রামের সিরাজুল, উদয়পুরের বাদশা, আদর্শপাড়ার নাফিজুল, আরাপপুরের ইয়াসিন, আলিফ, আদর্শপাড়ার তরি, গোয়ালপাড়ার তারিক ও পোড়াহাটী গ্রামের মাহিমসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এদের মধ্যে ১৪ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। বাকি ১১ জন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুসরাত জাহান হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সকাল থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াতসহ সাধারণ মানুষ রাস্তায় অবস্থান নেন। দুপুরের পর শেখ হাসিনা পালানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে উচ্ছাসে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। তারা ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
জনতা শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙে সেখানে স্বাধীনতা চত্বর লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।
মন্তব্য করুন