সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মচারীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সফটওয়্যার যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করেই ৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার নামীয় আসামিদের মধ্যে চারজন ও তদন্তে নতুন করে আসা চারজনের নামে এ অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় কমিশন। শিগগিরই অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানান দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম।
দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযোগপত্রে নাম থাকা এজাহার নামীয় চার আসামি হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মার্কেটাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের যৌথ মালিক মো. আব্দুস সাত্তার সরকার ও মো. হাসান হাবিব, বেঙ্গল সাইন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যালের মালিক মো. জাহির উদ্দিন সরকার ও ইউনিভার্সেল ট্রেড করপোরেশনের মালিক মো. আসাদুর রহমান। মারা যাওয়ায় এজাহার নামীয় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার শেখ শাহজাহানের নাম বাদ দেওয়া হয়।
তদন্তে নাম আসায় নতুন করে অভিযোগপত্রভুক্ত করা হয়েছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, ইএনটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার নারায়ণ প্রসাদ সান্যাল, শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শামসুর রহমান ও মেডিকেল কলেজটির স্টোর কিপার হাসান হাবিব।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম কেনার সঙ্গে যথোপযুক্ত ও যৌক্তিক কারণ এবং চাহিদা ছাড়া পিএসিএস নামে একটি সফটওয়্যারসহ সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
দরপত্র অংশ নিয়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেঙ্গল সাইন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানি ও মার্কেটাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি রেসপন্সিভ এবং ইউনিভার্সেল ট্রেড করপোরেশনকে নন রেসপন্সিভ বিবেচনা করা হয়। কাগজে-কলমে দরপত্রে অংশ নেওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠান পৃথক দেখা গেলেও বাস্তবে দর প্রস্তাব দাখিলকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক মূলত মো. জাহির উদ্দিন সরকার।
এর মধ্যে মার্কেন্টাইল ট্রেন ইন্টারন্যাশনাল জাহিরুদ্দিন সরকারের বাবা মো. আব্দুস সাত্তার সরকার ও তার ছেলে মোহাম্মদ আহসান হাবিবের যৌথ নামে এবং ইউনিভার্সাল ট্রেড জাহিরুদ্দিনের ভগ্নিপতি মো. আসাদুর রহমানের নামে।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে একে অপরের যোগসাজশে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে সাজানো দরপত্র দাখিল করে পিএসিএস নামক সফটওয়্যারসহ সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করে, সরবরাহ দেখিয়ে সরকারি ৬ কোটি ৬ লাখ ৯৯ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর দুদকের তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চারজন ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের তত্ত্বাবধায়ককে আসামি করে একটি মামলা করেন।
মন্তব্য করুন