নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় রোপা আমনের জমি তৈরি, চারা উত্তোলন ও চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। কৃষকদের পাশাপাশি আমনের চারা উত্তোলন ও রোপণের কাজে ব্যস্ততা বেড়েছে এ এলাকার নারী কৃষি শ্রমিকদের।
মহাদেবপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে আমনের চারা রোপণের কাজ। ইতোমধ্যেই ৫০-৬০ ভাগ জমির রোপা আমন রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যেই অবশিষ্ট জমির চারা রোপণের কাজ শেষ হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন। এবার রোপা আমন মৌসুমের শুরুতেই পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমনের জমিতে পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল কৃষকরা। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গভীর-অগভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে চারা রোপণের কাজ করতে হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমিতে চারা রোপণ করতে সেচ বাবদ কৃষককে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। গতকালের বৃষ্টির পানিতে স্বাচ্ছন্দ্যে আমনের চারা রোপণের কাজ চলবে বলে জানান কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার মহাদেবপুর উপজেলায় ২৮ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে রোপা আমন চাষে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। অধিক ফলনের আশায় এ অঞ্চলের কৃষকরা এবার স্থানীয় জাতের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল ধানের চারা রোপণ করছেন। এসব জাতের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণা-৫, গুটি স্বর্ণা, বিআর ১১, ব্রিধান ৩৩, ব্রিধান ৫১, ৫২ ও বিনা-৭সহ উফশী জাতের ধানের চারা।
মহাদেবপুর উপজেলার সুজাইল গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ ও নাটশাল গ্রামের কৃষক জাহেদুল ইসলাম জানান, এবার তারা অধিকাংশ জমিতেই স্বর্ণা-৫ জাতের ধান রোপণ করেছেন। বাকি জমিতে চিনি আতপ ধান লাগাবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন। এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন স্বর্ণা -৫ জাতের ধানে রোগবালাই কম হয় এবং উচ্চ ফলনশীল বলে এই ধান বেশি লাগিয়েছেন। পাশাপাশি চিনি আতপ ধানের দাম বেশি পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পোলাও বিরিয়ানি খুব মজাদায়কভাবে খাওয়া যায় বলে চিনি আতপ ধান চাষে অধিক আগ্রহ এ এলাকার কৃষকের।
এ বিষয়ে মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ জানান, মহাদেবপুর উপজেলায় ২৮ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন