লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সব নাগরিক সুবিধা পাচ্ছেন ছিটমহলের মানুষ

বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া বিলুপ্ত ছিটমহল। ছবি : কালবেলা
বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া বিলুপ্ত ছিটমহল। ছবি : কালবেলা

দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছে সরকার। তাদের দেশের মূলধারায় আনতে সব নাগরিক সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। গত ৯ বছরে পাল্টে গেছে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর জীবনমান।

দেশের অন্যান্য নাগরিকের মতো বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীকে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত, শিক্ষা লাভের সুযোগ, সব ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রেখেছে সরকার।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী নানা আয়োজনে লালমনিরহাটের বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছেন বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল মুজিব-ইন্দিরা নগরে চার জেলার বিলুপ্ত ছিটমহল আন্দোলন নেতাদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিলুপ্ত ছিটমহল সমন্বয় আন্দোলন কমিটির সভাপতি গোলাম মতিন রুমির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী জেলার বিলুপ্ত ছিটমহলের নেতারা বক্তব্য দেন। এ সময় বক্তারা ১ আগস্টকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ছিটমহলমুক্ত দিবস ঘোষণার দাবি জানান। জানা গেছে, বিলুপ্ত বাংলাদেশের ১১১টি ছিটমহলের ৪১ হাজার নাগরিক দীর্ঘদিন থেকে মৌলিক অধিকার বঞ্চিত ছিলেন। ১৭ হাজার ১৫৮ একর আয়তনের এসব ছিটমহলের অধিবাসীর জন্য ছিল না কোনো নির্দিষ্ট দেশ ও পরিচয়। ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন।

অবশেষে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় তারা মুক্তির স্বাদ পান। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে মোমবাতি প্রজ্বলন এবং ১ আগস্ট সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয় অভিশপ্ত সেই ছিটমহল নামটি। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পান এসব মানুষ।

স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিলুপ্ত এসব ছিটমহলের মানুষের উন্নয়নে সরকার ব্যাপক কাজ শুরু করেছে। দীর্ঘ সময় পিছিয়ে থাকা এসব মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, আশ্রয়ণ প্রকল্প, মসজিদ, মন্দির, কমিউনিটি ক্লিনিক, রাস্তাঘাট নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগ, কৃষিঋণ প্রদানসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলছে।

বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী ষাটোর্ধ্ব আব্দুল হামিদ কালবেলাকে জানান, জেলহাজতের চেয়েও খারাপ অবস্থায় ছিলাম আমরা। আমাদের কোনো পরিচয় ছিল না। দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আত্মীয় করতে চাইত না। নিজের সন্তানদের অন্য পরিচয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে হতো। নানা প্রতিবন্ধকতায় সন্তানদের উচ্চশিক্ষা অর্জন করাতে পারিনি।

ছিটমহল আন্দোলনের নেতা হারুন অর রশীদ কালবেলাকে জানান, দীর্ঘ সময় আন্দোলন-সংগ্রামের পর আমরা ৬৮ বছরের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছি। পেয়েছি জাতীয় পরিচয়পত্র। এখন আমরা গর্ব করে বলতে পারি ‘আমরা বাংলাদেশি’।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ কালবেলাকে জানান, স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিলুপ্ত এসব ছিটমহলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সব ধরনের উন্নয়ন করেছে সরকার। প্রসঙ্গত, লালমনিরহাটে ৫৯, কুড়িগ্রামে ১২, নীলফামারীতে চার ও পঞ্চগড়ে ৩৬টিসহ ১১১টি ছিটমহল রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আবার শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস

দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে শক্তিশালী মালদ্বীপের পাসপোর্ট

কুয়াশা ও তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তা

দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন দাবানলকে ভয়াবহ করছে আরও

ধুম ৪-এ রণবীর

আমি কারাগারে বৈষম্যের শিকার : পলক

পয়েন্ট হারানোর পর গোলকিপারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন গার্দিওলা

লালমনিরহাটে পেট্রল পাম্প থেকে বাস চুরি

অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রেখে কাজ করছে : আইজিপি

পুলিশের সাবেক সোর্সকে পিটিয়ে হত্যা

১০

অপরাধ-বিতর্কিত ভূমিকায় জড়িত কর্মকর্তাকে ধরা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১১

দাবানলে প্রাণহানির সর্বশেষ

১২

ইনজুরিতে বিপিএলকে বিদায় বললেন রাহকিম কর্নওয়াল

১৩

ডেসটিনির এমডি রফিকুলসহ ১৯ জনের ১২ বছর কারাদণ্ড

১৪

আনিসুল-দীপু মনিসহ ৯ জন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার 

১৫

রোহিত-কোহলিদের সফরে পরিবারের উপস্থিতি সীমিত করছে বিসিসিআই

১৬

এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ

১৭

সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে চার কমিশন

১৮

তল্লাশির সময় পুলিশের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ২

১৯

ম্যানসিটির শিরোপা বাতিল হলে পার্টি দিবেন ক্লপ

২০
X