কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে কেড়ে নিল রুবেলের স্বপ্ন। একটি বুলেট তার স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে।
গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাত ৮টায় রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বর জিরো পয়েন্টের সামনে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রুবেল। কিশোরগঞ্জের কলিগরা গ্রামের বাড়িতে খবর দিয়ে ওই দিনই রাত ২টার দিকে রুবেলের নিথর দেহ নিয়ে আসে উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের হাছলা গ্রামের বাড়িতে। রাত আড়াইটায় বেলংকা মুন্সিবাড়ি জামে মসজিদে রুবেলের জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয় স্থানীয় পঞ্চগ্রাম কবরস্থানে।
তাড়াইল উপজেলার হাছলা পাথারিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক ফরিদ উদ্দিনের ৪ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে পঞ্চম রুবেল। পুরো নাম তরিকুল ইসলাম রুবেল। গ্রামের বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বাবা কৃষিকাজ করে সংসারের ভার সইতে পারছেন না দেখে পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য ৭ বছর আগে এলাকা ছেড়ে পাড়ি জমান রাজধানী ঢাকায়। নিজের চেষ্টায় বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে বছর তিনেক আগে চাকরি নেন মিরপুর-১৩ মন্দির গেট এলাকার রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিতে।
ঘটনার দিন অফিসের কাজ সেরে রাত ৮টায় বের হয়ে ৫৬৯ সেনপাড়া পর্বত, মিরপুর-১৪ তে নিজ বাসস্থানে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন রুবেল।
রুবেলের গ্রামের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, পুরো পরিবারে বইছে শোকের মাতম। রুবেলের বাবা ফরিদ উদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে কালবেলাকে বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। রুবেলের স্বপ্ন ছিল বাড়িতে একটি পাকাঘর তৈরি করবে। মৃত্যুর আগের দিন আমাকে ফোনে বলেছে কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়ি আসবে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার ছেলে তো লেখাপড়া করে না। কোনো রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত না। কেন তাকে এভাবে মেরে ফেলা হলো। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
কলেজ পড়ুয়া রুবেলের ভাই জুয়েল বলেন, রুবেলের দাফনের পর তাড়াইল থানা থেকে ফোন করে তথ্য নিয়েছে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ খোঁজ নেয়নি।
মন্তব্য করুন