বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে লাঠিচার্জের ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানানো হয়।
বুধবার (৩১ জুলাই) বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মিথুন সাহাসহ নেতারা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
আহত দৈনিক যুগান্তরের ফটো সাংবাদিক শামীম আহম্মেদ বলেন, লাঠিচার্জের সময়ে আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার হাতে ক্যামেরা। তখনো আমাকে লাঠিপেটা করে। আজকের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোটেও পেশাদারি আচরণ করেনি। অপেশাদার ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
হামলায় আহত বার্তা টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি এসএলটি তুহিন জানান, আমরা অনেক সাংবাদিক একসঙ্গেই ছিলাম। শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার সময়ে আমাদেরও পেটানো শুরু করে। আমি পায়ে আঘাত পেয়েছি। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অন্য দুজন হলেন, এনটিভির ক্যামেরা পার্সন গোবিন্দ সাহা ও যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন হৃদয় চন্দ্র শীল।
স্থানীয় একটি দৈনিকের সাংবাদিক পাভেল বলেন, গণহারে সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করা হয়েছে। আমার গায়েও লাঠির আঘাত পড়েছে। তবে গুরুতর না হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়েছে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি। সংগঠনটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস বলেন, দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা জানাচ্ছি। ঘটনার ভিডিও আমি দেখেছি। আমার মনে হয়েছে বিনা কারণে এবং সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাংবাদিকদের পিটিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা ও তার ইউনিট। এভাবে পুলিশ লাঠিচার্জ করার এখতিয়ার রাখেন না।
এদিকে সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জের খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জিহাদুল কবির আহত সাংবাদিকদের খোঁজখবর নিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচিতে বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে প্রথমে নগরীর রোডের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে ও পরে সাড়ে ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে ফজলুল হক অ্যাভিনিউতে শিক্ষার্থীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এসময়ে সাংবাদিকদেরও মারধর করা হয়। এছাড়া আন্দোলনকারী অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
মন্তব্য করুন