কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংতার ঘটনায় সাভার ও আশুলিয়া থানায় ২১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব নাশকতার মামলায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীর পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তিনজন ও ক্ষমতাসীন দলের ১৬ পদধারী নেতাসহ অন্তত ৩০ নেতাকর্মীর নাম রয়েছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এমন মামলায় বিব্রত সাভার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ক্ষমতাশীন দলের নেতাকর্মীদের দাবি জীবন বাজি রেখে দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করেছে তারা। অথচ তাদের নামেই পুলিশের পক্ষ থেকে নাশকতার মামলা করা হয়েছে। এমন ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত এবং দুঃখজনক বলছেন সাভারের আ.লীগের নেতারা। কালবেলার সঙ্গে আলাপকালে আ.লীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মামলার নথিতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী ছাড়াও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পথরোধ করে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা, পুলিশকে আঘাত করে মারাত্মক জখম, ভাঙচুর, জনজীবন ও মালামালের ক্ষতি সাধন, ককটেল বিস্ফোরণে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিরা হলেন, আ.লীগ কর্মী মুলামদি মণ্ডল, আগের কমিটির ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং আশুলিয়া ইউনিয়ন আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন মণ্ডল প্রমুখ।
মামলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে কি না, কিংবা তারা জরিত ছিল কি না কালবেলার এমন প্রশ্নে মামলার বাদী গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
রুহুল আমিন মণ্ডল কালবেলাকে বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক, এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি আ. লীগের নিবেদিত একজন কর্মী। বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে মামলায় আমার নামও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এমন সংবাদ শোনার আগে আমার মরে যাওয়াই ভালো ছিল। আমাকে কেউ শত্রুতা করে এ মামলায় ঢুকিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি আমাকে মামলায় আসামি করার মধ্য দিয়ে মামলাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ডিবি ঢাকা জেলা উত্তরের ওসি রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বিপ্লব কালবেলাকে বলেন, ২১ মামলায় হাজারের অধিক দুষ্কৃতকারীকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে আরো সহস্রাধিক। নিরপরাধ কাউকে আসামি করা হয়নি। আমার জানা মতে কোন আ.লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়নি। দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনতেই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এ পর্যন্ত ডিবি অফিসে হামলা মামলায় ছাত্রশিবিরের নেতাসহ ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আশুলিয়া থানার ওসি এ এফ এম সায়েদ বলেন, আশুলিয়া থানায় পুলিশ বাদী হয়ে কোনো আ.লীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করিনি। শুধু যারা অগ্নিসংযোগ, জ্বালাও পোড়াও এবং ভাঙচুর চালিয়েছে সেই সব দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
সাভার মডেল থানার ওসি মো. শাহ্ জামান কালবেলাকে বলেন, আ.লীগের কাউকে আসামি করা হয়েছে কি না এ মুহূর্তে আমি কিছুই বলতে পারব না। বিষয়টি দেখে বলতে হবে কারণ কিছু মামলায় পুলিশ বাদী আবার কিছু মামলায় পাবলিক বাদী যাদের গাড়ি পুড়িয়েছে, স্থাপনা ধ্বংস করেছে।