পটুয়াখালীর বাউফলে এক প্রতিবন্ধী তরুণীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগে রিদয় মল্লিক (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত রিদয় মল্লিক মদনপুরা ইউনিয়নের হাবিব মল্লিকের ছেলে।
জানা যায়, গত সোমবার (১৫ জুলাই) ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের সময় হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে ঘটনাটি স্বীকার করে ভুক্তভোগীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে পুলিশে অভিযোগ না করতে অনুরোধ করে রিদয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে বিয়ের জন্য কাজিও ডাকা হয়। কিন্তু বিয়ে না করে স্থানীয় বখাটেদের সহযোগিতায় পালিয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বাউফল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী তরুণী ছোট বেলায় তার বাবাকে হারান। এরপর থেকে মদনপুরা ইউনিয়নে নানির কাছে থাকেন ভুক্তভোগী বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণী। দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ঘটনার দিন বাসার সামনে থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যান রিদয়। দীর্ঘ সময় ভুক্তভোগীকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে পরিবার। তখন বাড়ির পাশের মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের পরিত্যক্ত ঘরের কাছে গেলে ডাক-চিৎকার শুনতে পান তারা। ওই ঘরে প্রবেশ করে রিদয়কে হাতেনাতে আটক করেন তারা।
এ বিষয়ে তারা থানায় অভিযোগ করতে চাইলে অভিযুক্ত রিদয় স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জালালের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর বাড়িতে আসেন এবং ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে, ভুক্তভোগীকে বিয়ে করার আশ্বাস দেন। তার ইচ্ছাতে কাজিও ডেকে আনা হয়। কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করলে তখন হঠাৎ স্থানীয় বখাটেদের সহযোগিতায় সেখান থেকে পালিয়ে যান রিদয়।
ভুক্তভোগীর স্বজনরা বলেন, অভিযুক্ত রিদয় পালানোর পরও মামলা করতে তাদের বাধা দেয় মদনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ জালাল। ছেলেকে ফিরিয়ে এনে বিয়ের ব্যবস্থা করে দিবে বলেও তাদের বারবার আশ্বস্ত করেন এই ইউপি সদস্য। দীর্ঘসময় নষ্ট করেও জালাল কোনো সমাধান না করলে তারা থানায় অভিযোগ করেন।
ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জালাল বলেন, ঘটনার পর আমরা রিদয়ের কাছে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে সে অপরাধ স্বীকার করে। তাই সবার সম্মতিতে বিয়ের রায় দেন তিনি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রিদয় মল্লিককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পটুয়াখালীর সহকারী পুলিশ সুপার (বাউফল সার্কেল) মো. সাদ্দাম হোসাইন জানান, অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে।