সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:০০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

সিলেটে পর্যটক খরা, ক্ষতি হাজার হাজার কোটি টাকা

সিলেটের জাফলং। ছবি : সংগৃহীত
সিলেটের জাফলং। ছবি : সংগৃহীত

পর্যটক খরায় ভুগছে সিলেট। প্রথমে দফায় দফায় বন্যা ও পরে কারফিউ। স্থবির হয়ে পড়ে জনজীবন। গত তিন মাস ধরে সিলেটে দেখা মেলেনি পর্যটকের। চলতি মাসের অর্ধেক দিন দোকানপাট খুলতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ঈদুল আজহাসহ পর্যটনের এই ভরা মৌসুমে সিলেট বিভাগে পর্যটনখাতেই ক্ষতি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা। চলমান পরিস্থিতিতে মাস শেষে গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবেন কিনা সেটা নিয়ে সংশয়। সিলেটের পর্যটনশিল্প রক্ষায় সরকারি প্রণোদনার বিকল্প নেই বলেও দাবি করছেন পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা।

পর্যটনশিল্পকে ঘিরে সিলেট মহানগর ও মহানগরের বাইরে গড়ে ওঠেছে শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস। এই খাতে বিনিয়োগ কয়েক হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া সিলেটের রেস্টুরেন্ট, রেন্ট-এ-কার, কুটিরশিল্প ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত পর্যটনশিল্প। পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লাখো মানুষের জীবন জীবিকার চাকা ঘোরে। কেউ নৌকা দিয়ে পর্যটক পরিবহন করে, আবার কেউ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

কিন্তু গত মে মাস থেকে সিলেটে শুরু হয় বন্যা। তিন দফা বন্যায় বার বার বন্ধ ঘোষণা করা হয় পর্যটনকেন্দ্রগুলো। নদীতে পানি ও স্রোত বৃদ্ধি এবং প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটকরা সিলেটবিমুখ হয়ে পড়েন। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সিলেটে পর্যটকরা আসতে শুরু করেন। ফের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা শুরু করেন পর্যটনখাতের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই স্বপ্ন মিলিয়ে যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে। দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরে সংঘাত-সংঘর্ষ ও কারফিউয়ের কারণে পর্যটনখাতের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

সিলেটের হোটেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে সারা দেশে পর্যটন ব্যবসা কমলেও সিলেটে পর্যটক আগমন হয় সবেচেয়ে বেশি। বর্ষায় প্রকৃতি নবযৌবন লাভ করে, এতে সৌন্দর্য বাড়ে, প্রকৃতিনির্ভর সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর। ফলে ওই সময় সারা দেশের পর্যটকদের ঝোঁক থাকে সিলেটে। কিন্তু এবার বন্যা ও কোটা আন্দোলনে পর্যটকদের দেখা মেলেনি সিলেটে। এমনকি বন্যার কারণে ঈদুল আজহায়ও সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ ছিল। ফলে গেল তিন মাস ধরে সিলেটের বেশিরভাগ হোটেল পর্যটকশূন্য রয়েছে।

সিলেট চেম্বারের পরিচালক শান্ত দেব বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে সারা বছরই সিলেটে পর্যটকরা আসেন। কিন্তু এবারের বাস্তবতা ভিন্ন। বন্যার পর আন্দোলনে পর্যটকশূন্য হয়ে গেছে সিলেট। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে। সরকারি প্রণোদনা ছাড়া হোটেলসহ সিলেটের পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, সিলেটবাসীর ভাগ্য খুব খারাপ। ২০২০-২১ সাল গেল করোনায়। স্থবির হয়ে যায় সবকিছু। ২৩ সালে ঘুরে দাঁড়ানোর একটু চেষ্টা ছিল, কিন্তু ২০২৪ সালের দফায় দফায় বন্যা ও আন্দোলনে সব শেষ হয়ে গেছে। ঈদের পর থেকে সিলেটের পর্যটন খাতের ব্যবসা খুবই কঠিন সময় পার করছে। বন্যা ও আন্দোলনের কারণে সিলেট বিভাগে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। এই খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারি প্রণোদনার প্রয়োজন। যারা ঋণ নিয়েছেন তাদের সুদ মওকুফ করতে পারলে কিছুটা সুবিধা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মন খারাপ হলেই বিল্লাল দখলে নিতেন অন্যের সম্পদ

কে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার

খাতা না দেখেই মনগড়া রেজাল্ট দিয়েছে, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

দেশের ৬ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

চিলমারীতে নদীতে ৫০০ হেক্টর জমি, নিঃস্ব ৩০০ পরিবার

বায়তুল মোকাররম মসজিদে নতুন খতিব নিযুক্ত 

১৮ অক্টোবর : ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা

১৮ অক্টোবর : নামাজের সময়সূচি

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

বেরোবিতে ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

১০

ধর্মপাশায় কালবেলার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১১

‘পারকি সৈকতকে আকর্ষণীয় করতে মাস্টারপ্লান নেওয়া হবে’

১২

বগুড়ায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ গ্রেপ্তার ৩  

১৩

দেবিদ্বারে কালবেলার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

১৪

কুলাউড়া ছাত্রলীগ সভাপতি তায়েফ কারাগারে

১৫

তাহিরপুরে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১৬

উখিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৫

১৭

নরসিংদীতে ছাত্রদলের দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৪

১৮

যেকোনো সময় চসিক মেয়রের চেয়ারে ডা. শাহাদাত

১৯

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত

২০
X