গেল কয়েকদিনে চলমান ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় প্রভাব পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে। এতে বিঘ্ন ঘটেছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে।
তবে দেশের চলমান সংকটের মধ্য দিয়েও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম ছিল কিছুটা স্বাভাবিক। এ অবস্থা কাটিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় কর্ম চাঞ্চল্যতা ফিরবে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হিমায়িত মাছ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় রপ্তানি করা হয়। সংকটের এ সময়েও এ বন্দর দিয়ে হিমায়িত মাছ, তুলা ও সিমেন্ট রপ্তানি করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, দেশের চলমান এ সংকটে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। এতে বন্দরের আয় আগের থেকে অর্ধেকে নেমে এসেছে।
স্বাভাবিক সময়ে এ বন্দর দিয়ে প্রায় ২ লাখ ডলার মূল্যের হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, প্লাস্টিক ও ফার্নিচারসহ অন্তত ১৫-২০ ধরনের পণ্য ভারতে রপ্তানি হত। দেশজুড়ে কারফিউ ও চলমান অস্থিরতায় গেল ৫ দিনে নামমাত্র মাছ ও সিমেন্টছাড়া রপ্তানি করা যায়নি কিছুই। এ ছাড়া ইন্টারনেট বিভ্রাটের কারণে অনলাইন ব্যবস্থা না থাকায় ২০ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ম্যানুয়ালি বিলের মাধ্যমে মাত্র ৫৩ টন মাছ ও ৭০ টন সিমেন্ট রপ্তানি করা হয়েছে। এসব পণ্য থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ব্যবসায়ীদের দাবি এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তেমনই সরকারও হারাচ্ছে রাজস্ব।
আখাউড়া স্থলবন্দরে মাছ রপ্তানি সমিতির সভাপতি ইদন মিয়া জানান, বন্দর দিয়ে স্বাভাবিক সময়ে ২৫-৩০ টন মাছ রপ্তানি করা হত। কিন্তু চলমান সংকটের কারণে রপ্তানির পরিমান ১০-১২ টন নেমে এসেছে। যার কারণে মাছ ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় কিছুটা মন্দা গিয়েছে। আশা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে আমাদের মাছ রপ্তানি আগের মতো স্বাভাবিক হবে।
আখাউড়া স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি হাসিব হুমায়ুন বলেন, গত কয়েকদিন দেশের চলমান আন্দোলনের কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রভাব পড়েছে। স্বাভাবিক পরিস্থিতি নেই বলে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা মালামাল পাঠাতে পারেনি। তবে রপ্তানি অব্যহত রাখতে এলাকার আশপাশের খাল-বিল থেকে মাছ এনে রপ্তানি করেছি। এ সময় ম্যানুয়াল সিস্টেমে কাস্টমসের কাজ সম্পন্ন করেছে ব্যবসায়ীরা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মাহমুদ-উল হাসান জানান, চলমান সংকটেও আমাদের বন্দরে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। আমদানি-রপ্তানি সচল ছিল। প্রতিদিন পণ্যবাহী গাড়ি ভারতে গিয়েছে।
তবে স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার (রাজস্ব) মো. ইমরান হোসেন জানান, ইন্টারনেট না থাকায় বন্দরের অফিসিয়াল অনলাইনে যে কাজগুলো ছিল সেই কাজগুলো ম্যানুয়ালি আমরা সম্পন্ন করেছি। এনবিআর থেকে নির্দেশনা ছিল পচনশীল পণ্যগুলো যেন ম্যানুয়ালি কাজ করে ভারতে পাঠানো হয়। আগে গড়ে ১৫-২০টি ট্রাক রপ্তানি হত, এ মুহূর্তে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির জন্য কিছুটা কমে এসেছে। আজও মাছের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করছে।
মন্তব্য করুন