মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় দুগ্ধ খামারিদের কারফিউয়ের পাঁচ দিনে ৪ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এ উপজেলায় স্বাভাবিক সময়ে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
কিন্তু দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র সারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে শুক্রবার রাত ১২টা থেকে কারফিউ ঘোষণা করে সরকার। পরে গত মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) থেকে যানবাহন চলাচলের অনুমতি আসে।
১৯ থেকে ২৩ জুলাই মোট পাঁচ দিন খামারিরা গড়ে দুধ বিক্রি করেছেন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা লিটারে। এতে ওই কয়দিন তাদের উৎপাদন খরচও উঠেনি দাবি ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে দুগ্ধ খামার ২ হাজার ৬২৭টি ও কৃষক ১০ হাজার ৯৮০ জন। উপজেলায় দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৭ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন হচ্ছে ৪১ লাখ মেট্রিক টন। সাটুরিয়ার দরগ্রাম বাজারের দুগ্ধ ব্যবসায়ী ভিম ঘোষ বলেন, আমি প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার লিটার দুধ কিনে থাকি।
স্বাভাবিক সময়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা লিটারে দুধ কিনে থাকি। কিন্তু শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঁচ দিন যানবাহন চলাচল না করায় আমি কোনো দুধ কিনিনি। ওই সময় গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি হয়েছে। কোনো বাজারে এর চেয়েও কম গেছে।
দুগ্ধ ব্যবসায়ী ভিম ঘোষের তথ্যানুযায়ী, উপজেলায় প্রতিদিন ৮২ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। আর পাঁচ দিনে ৪ কোটি ১০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে।
খলিবাদ গ্রামের খামারি পাখি বলেন, আমার খামারে প্রতিদিন ১৮ কেজি দুধ হয়। গত পাঁচ দিন আমি ৩৫ টাকা করে বিক্রি করেছি। তাতে আমাদের উৎপাদন খরচই উঠেনি।
এ ব্যাপারে গোপালপুর বাজারের ব্যবসায়ী আপেল মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়িতে দুই থেকে চারটি গরু লালনপালন করা হয়। এই বাজারে এক ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ হাজার লিটার দুধ বিক্রি হয়। যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেপারিরা দুধ কিনেননি। তখন নামমাত্র মূল্যে দুধ বিক্রি করেছেন খামারিরা।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইমরান হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। যখন দুধের দাম কম থাকে তখন দুধ বিক্রি না করতে পারলে মাখন, ঘি ও ছানা তৈরি করে বাজারজাত করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকি।
মন্তব্য করুন