বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ মামলায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নের নেতাসহ ৮৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও দেড়শ জনকে আসামি করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক খালেকুজ্জামান রাজা বাদী হয়ে গত ২২ জুলাই রাতে ৮৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও দেড়শ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) জানা যায়, মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শহর যুবলীগের রহমান নগর আঞ্চলিক কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক কাজল, বিআরটিসি শপিং কমপ্লেক্সের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন আকরাম, শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাওন পাল, বগুড়ার বিআইআইটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ সাহাবুদ্দিন সৈকত ও আইআইটিবির পরিচালক সবুর শাহ লোটাস, বগুড়া পৌরসভার নারী কাউন্সিলর ৬৮ বছর বয়সী শিরিন আক্তার।
এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক জাকি তাজওয়ার সমুদ্রকেও আসামি করা হয়েছে। জাকি গত ১৬ জুলাই রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এ মামলায় তাকে আসামি করায় জাকি জানান, পদত্যাগ করায় কেউ হয়তো আওয়ামী লীগ নেতাদের ভুল বুঝিয়ে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা কাজল দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় আসামি হওয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে বলেন, ঘটনার সময় আমিসহ সাধারণ সম্পাদক এবং কমিটির অন্যান্য সদস্য মার্কেট রক্ষা নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। দোকানপাটে হামলা এবং লুটপাট ঠেকাতে সবাই মিলে মার্কেটের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীদের মার্কেটে প্রবেশ বন্ধ করে দিই। অথচ আমি নিজে যে দলের সদস্য, সেই দলীয় কার্যালয় পোড়ানোর ঘটনায় আসামি হওয়া খুবই লজ্জাজনক মনে হচ্ছে।
জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, অভিযোগটি খুবই হাস্যকর। কারণ একই ভবনে আওয়ামী লীগ কার্যালয় এবং আমাদের কার্যালয় অবস্থিত। হামলা এবং অগ্নিসংযোগে শুধু আওয়ামী লীগ অফিসই নয়, ছাত্র ইউনিয়ন এবং কমিউনিস্ট পার্টির অফিসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মামলা দেখে তো মনে হচ্ছে আমরা নিজেদের অফিসেই হামলা করেছি।
মামলার বাদী জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক খালেকুজ্জামান রাজা কালবেলাকে বলেন, দলের উপদপ্তর সম্পাদক হিসেবে আমাকে বাদী করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিষয়ে দলীয় সভায় সিদ্ধান্তক্রমে নাম দেওয়া হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ কালবেলাকে জানান, জেলা আওয়ামী লীগ থেকে লিখিত যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সেটিই মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তকালে যাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে না, তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন