সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বন্যার পর কারফিউ, সিলেটে নাকাল নিম্নআয়ের মানুষ

সিলেটে বন্যার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত
সিলেটে বন্যার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

তিন দফা বন্যায় নিঃস্ব সিলেটের মানুষ। এরপর এ মাসের শুরুতেই শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি করে। টানা পাঁচ দিনের কারফিউয়ে স্থবির হয়ে পড়ে সিলেটের জনজীবন। চরম বিপাকে পড়েছেন দিনমজুরেরা। অর্থকষ্টে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও।

সিলেটের বন্দর বাজার, শিবগঞ্জ, আম্বরখানা, মদীনা মার্কেট, শাহী ইদগাহ, মিরাবাজার, টিলাগড়, মেজরটিলা ঘুরে দেখা যায়, কারফিউ শিথিল হলেও শ্রমিকরা বিভিন্ন পয়েন্টে অলস বসে আছেন।

তারা বলছেন, দেশে আন্দোলন থাকায় তাদের কেউ কাজে নিতে চায় না। কাজ না থাকায় খুব কষ্টে সময় যাচ্ছে। টাকা না থাকায় অনেক পরিবারে চুলা জ্বলছে না। কিছু পরিবার খেতে পেলেও আধ পেটে থাকতে হচ্ছে অনেককে।

বুধবার (২৪ জুলাই) সকালে নগরীর বন্দরবাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় অর্ধশত দিনমজুর বসে আছেন। কারও হাতে কোদাল, কেউবা টুকরিতে মাথা রেখে ঝিমাচ্ছেন। কিছু আছেন চায়ের দোকানের পাশে। কাছেই বসে ছিলেন কয়েকজন নারী শ্রমিক। খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠার কারণে তাদের মধ্যে ঠিকমতো চোখের পাতাই খুলতে পারছিলেন না মন্দিরা দেবী। অন্য নারী শ্রমিক আকলিমা খাতুনের কাঁধে ভর দিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি।

আকলিমা জানান, গত শনিবার থেকে তাদের কোনো কাজ নেই। লোকজন তাদের নিতে আসে না। প্রতিদিন বসে থেকে থেকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়। তার স্বামী রমিজ মিয়া একদিন কাজ করে কিছু চাল নিয়ে গিয়েছিলেন, সেগুলোতেই চলছে।

এই কথোপকথনের পর যোগ দেন হাজেরা বেগম, মুসলিমা বেগম, তাহেরা বানু, আনোয়ারাসহ বেশ কয়েকজন। তারা সবাই একযোগে জানান, তারা থাকেন নগরীর মিরাবাজার ও কুশীঘাট এলাকায়। কয়েকদিন আগের বন্যায় ছিলেন আশ্রয়কেন্দ্রে। বন্যা কমার পর ঘরে গেলেও শান্তি নেই। বাসার মালিক ঘর ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। ঘরে তেমন খাবারও নেই। অথচ গত ৫ দিন ধরে তাদের কোনো কাজ নেই।

তেররতন এলাকার মোকছেদা বেগম কালবেলাকে জানান, বন্যার কারণে তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এখন কারফিউর কারণে সেই কষ্ট সীমা ছাড়িয়েছে। বাসার পাশের দোকানে বাকি হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০০ টাকা। এখন দোকানদারও বাকি দিতে চান না।

তিনি আরও জানান, একবেলা কামলা খাটলে ৬০০ টাকা মেলে। বেলা ১১টা পর্যন্ত কেউ নিতে আসেনি। যারা কাজে নিতে আসার কথা, তাদের নির্মাণকাজও বন্ধ।

পাশে বসেই চা পান করছিলেন আনোয়ার মিয়া। তিনি জানান, গত কয়েক দিনে শুধু চা দোকানের বাকি হয়েছে ৩০০ টাকা। শুধু বাকির ওপর আছি। জানি না এই অবস্থার কবে উন্নতি হবে। এভাবে চলতে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।

পাশেই চা দোকানদার ইদ্রিস আলী জানান, প্রতিদিন সকালে তিনি বন্দরবাজারে চা বিক্রি করেন। গত কয়েক দিন ধরে তাদের তিনি বাকিতে চা পান করাচ্ছেন। যারা নগদে খায় তাদেরটা দিয়ে নিজেই কোনোরকম চলছেন।

জানা গেছে, কারফিউর কারণে বাসাবাড়ি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ বন্ধ। লোকজনের হাতে টাকা-পয়সাও নেই। এমন অবস্থায় মারাত্মক কষ্টে দিন পার করছেন দিনমজুররা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
ঘটনাপ্রবাহ: কোটা সংস্কার আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিছিলে বিএনপি নেতার গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রৌমারীতে ব্যবসায়ীদের আহ্বায়ক কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত

৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ায় মামুনের বিরুদ্ধে যুবদলের মামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ক্ষমা পেয়ে আমিরাত থেকে ১২ জন ফিরছেন চট্টগ্রামে

‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার দুই ভাবে পরাজিত’

মহানবীকে (সা.) কটূক্তিকারী সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

শিবচর আঞ্চলিক সড়কে গ্রামবাসীর বৃক্ষরোপণ

মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা, ৭ দিন পর ফাঁস

১২ দিনেও মেলেনি রানীনগরে নিখোঁজ নার্গিসের সন্ধান

১০

দায়িত্বশীলদের নিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্র শিবিরের সমাবেশ

১১

আযহারী শিক্ষার্থীরা হবে বাংলাদেশ ও মিশরীয় ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন : মিশরীয় রাষ্ট্রদূত

১২

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৩

আন্দোলনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ কর্মীকে গণধোলাই

১৪

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক সমাবেশ

১৫

কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

১৬

পাকিস্তানের জলসীমায় বিপুল তেল-গ্যাস মজুতের সন্ধান

১৭

বিসিবির দুর্নীতির তদন্ত দাবি সাবেকদের

১৮

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

১৯

জেল খেটেছি তবু শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যাইনি : সাবেক এমপি হাবিব

২০
X