কড়া নিরাপত্তায় গাজীপুরে খুলে দেওয়া হয়েছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্প। বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা।
জানা যায়, সকাল থেকে গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে দলে দলে কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড নিয়ে কারখানায় প্রবেশ করছেন তারা। কারখানা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে শিল্প পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল দল। এ ছাড়া শিল্প এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। সড়ক, মহাসড়কে বেড়েছে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি।
শ্রমিকরা বলছেন, কারখানা বন্ধ থাকায় টানা কয়েক দিন তারা ঘরে আটকে ছিলেন। কাজে ফেরা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। তবে আজ কারখানা খুলে দেওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে তাদের।
কারখানা মালিকরা বলছেন, টানা কারফিউতে লোকসানে পড়েছে পোশাক খাত। তবে কারখানা খুলে দেওয়ায় শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন, লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।
এ ব্যাপারে সাদমা গ্রুপের পরিচালক মো. সোহেল রানা বলেন, টানা কারফিউতে আমাদের পোশাক কারখানা বন্ধ থাকায় লোকসানে পড়েছি। তবে কারখানা খুলে দেওয়ায় সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব বলে আমাদের বিশ্বাস।
তিনি বলেন, কারখানার বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। এ ছাড়া আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীদের মাধ্যমে ভেতরে শ্রমিকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শ্রমিকদের আইডি কার্ড পরীক্ষা করে তাদের কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে টহল জোরদার করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া শিল্প এলাকায় বাড়তি নজরদারি করছেন তারা। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ কেটেছে কারখানা সংশ্লিষ্টদের।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, কারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন তারা। নাশকতাকারীরা শ্রমিকদের ছদ্মবেশে যেন অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সজাগ দৃষ্টি রয়েছে তাদের।
এ ব্যাপারে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এর পুলিশ সুপার সারওয়ার আলম বলেন, গত কয়েক দিন গাজীপুরা, গাছা ও টঙ্গী এলাকায় ব্যাপক নাশকতা হয়েছে। সে কারণে এসব শিল্প এলাকায় আলাদা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আমাদের তিন শতাধিক সদস্য বিভিন্ন শিল্প এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। ৮টি টহল দল টহল জোরদার করেছে। এ ছাড়া গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
কোনাবাড়ি এলাকায় বিজিবির পক্ষ থেকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে গাজীপুর ৬৩ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে ৬ প্লাটুন বিজিবি সদস্য পোশাক কারখানাসহ সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছেন। পোশাক কারখানায় যাতে নাশকতাকারীরা কোনো ধরনের অরাজকতা করতে না পারে সেজন্য বিজিবির পাশাপাশি র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।
শিল্প পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, গাজীপুরে ২ হাজারের বেশি তৈরি পোশাকশিল্প রয়েছে। প্রাথমিকভাবে বুধবার তিন শতাধিক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব কারখানা খুলে দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন