সাতক্ষীরায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সদর থানা ঘেরাওয়ের চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে। এতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ আন্দোলনকারী অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার নারিকেলতলা মোড়ে জড়ো হয়। পরে তারা মিছিল নিয়ে সদর হাসপাতাল মোড় হয়ে সঙ্গীতা সিনেমা হলের সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা নিউমার্কেট মোড় অতিক্রম করে বেলা সাড়ে ১২টায় সাতক্ষীরা সদর থানা ঘেরাও করে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, সদর থানার এএসআই জিল্লুর রহমান, ডিবি পুলিশের এএসআই শাহানুর হোসেন ও কনস্টেবল নাদিম।
জানা গেছে , থানায় হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে ও চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে সদর থানা সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কমপক্ষে ১৫ জনকে আটক করা হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহিন ইসলাম জানান, আমরা যারা সাধারণ শিক্ষার্থী রয়েছি তারা থানায় হামলার চেষ্টা করেনি। আমরা চেয়েছি অবস্থান কর্মসূচি করার জন্য। সেখানে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও কিছু বহিরাগতরা গিয়ে এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। আমরা প্রথম থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে কাজ করেছি।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরার সমন্বায়ক ও ছাত্র অধিকার পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি ইমরান হোসেন কয়েকজন ভাইকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ কারণেই শিক্ষার্থীরা থানার সামনে অবস্থান নেয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মহিদুল ইসলাম বলেন, থানায় হামলার ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি তারেক ফয়সাল ইবনে আজিজ বলেন, সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। কোনোরকম বিশৃঙ্খলা এড়াতে শুরু থেকেই জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের নজরদারি ছিল।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকা কিছু দুষ্কৃতকারী হঠাৎ থানার সামনে গিয়ে থানায় হামলার চেষ্টা করে। এ সময় দুষ্কৃতকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করেছে।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী বলেন, পুলিশ সবসময়ই শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে কাজ করে আসছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে কিছু দুষ্কৃতকারী আজ থানায় হামলা করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। এ ঘটনায় নিয়ম অনুযায়ী যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নেব।
এদিকে, কোটা আন্দোলনের নামে সহিংসতা প্রতিরোধে সাতক্ষীরা জেলা আ. লীগের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় দলটির নেতাকর্মীরা। এ সময় সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়রা পারভীন সেঁজুতি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একে ফজলুল হক, যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবু ও ফিরোজ কামাল শুভ্র, সদর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলীসহ দলটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন