রাজশাহীতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলাকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ৬টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
এতে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবিন সবুজসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কমপ্লিট শাটডাউন সফল করতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে জড়ো হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়।
আন্দোলনকারীরা পিছু হটার সময় বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। ককটেলের স্প্লিন্টারের আঘাতে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবিন সবুজ, ছাত্রলীগ কর্মী নাঈম আহত হন। পরে আন্দোলনকারীদের দুই-তিনজনকে ধরে মারধর করে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নামপরিচায় জানা যায়নি। ককটেলের আঘাতে এক পথচারীও আহত হয়েছে। তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নামে ছাত্রদল-শিবিরকর্মীরা সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হয়ে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছিল। পরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া দেয়।
তিনি আরো বলেন, এ সময় শিবির কর্মীরা কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে মহানগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সবুজ ও কর্মী নাঈম আহত হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
এদিকে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ করছে। সংঘর্ষের ঘটনায় সাহেববাজার জিরোপয়েন্টসহ আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সংঘর্ষের সঙ্গে সঙ্গেই সাহেব বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। শহরে অল্প যানবাহন চলাচল করছে।
এ ছাড়াও অবরোধের কারণে রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে আন্তঃনগর বাস চলাচল করছে খুবই কম। অপরদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছেড়ে চলে গেছেন।
বোয়ালিয়া থানার ওসি হুমায়ন কবীর কালবেলাকে বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনের নামে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে।
পরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া খেয়ে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশেল অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ কাজ করছে।’
মন্তব্য করুন