কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে উভয়পক্ষ থেকেই। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরের ইবি রোড, ইসলামিয়া কলেজ মাঠ ও বিএনপি অফিস এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বুধবার বিকেল থেকে শহরের ইসলামিয়া কলেজ মাঠে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু দফায় দাফায় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিকেলের দিকে তারা কোটা আন্দোলনে ৬ ছাত্র নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় মিছিল থেকে ২নং পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালানো হয়। তখন থেকেই সংঘর্ষ শুরু হয়।
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। রাত ১০টার দিকে বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম লিমন বলেন, এই আন্দোলন এখন ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদল আর ছাত্রশিবির আন্দোলনের নামে নাশকতা শুরু করেছে। তারা পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করেছে। পরে আমরা তাদের প্রতিরোধ করতে গেলে আমাদের ওপরও হামলা চালায়। এতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের অন্তত ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ছিল। তারা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বিএনপি নিহত ৬ ছাত্রের গায়েবানা জানাজা করেছে। এর পরের ঘটনাগুলো কোথা থেকে হচ্ছে, কেন হচ্ছে কারা করছে আমরা জানি না। রাত ১০টার দিকে হঠাৎ শুনি আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা বিএনপি অফিসে আগুন দিয়েছে।
সংঘর্ষে ছাত্রদলের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ছাত্রদের সংগঠন। এই আন্দোলন যেহেতু ছাত্রদের সেখানে ছাত্রদল অংশগ্রহণ করতেই পারে। তবে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী সেখানে ছিল না। সংঘর্ষে ছাত্রদল ও সাধারণ ছাত্রদের অনেকেই আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।
সদর থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিকেলে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। যারাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটাবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শহরে ও মহাসড়কে নাশকতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
মন্তব্য করুন