শেরপুরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এতে ১০ পুলিশসহ ৩০ কোটা আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। এ সময় শফিকুল ইসলাম নামে পুলিশের এক নায়েক গুরুতর আহত হন। তিনি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করার সময় হঠাৎ তার হাতেই তা বিস্ফোরণ হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
বুধবার (১৭ জুলাই) পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী ওই মুখোমুখি সংঘর্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারসেল ছুড়েছেন। এ ঘটনায় শেরপুর জেলা শহরের কলেজ মোড়, খরমপুর, গোয়ালপট্রি, নিউমার্কেট ও থানা মোড়সহ শহরের অর্ধেক দোকানপাট বন্ধ থাকে। এ ছাড়াও শহরের সব পয়েন্টে যানচলাচল বন্ধ থাকে। বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
জানা যায়, চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার দুপুরের পর থেকে কোটাবিরোধীরা শেরপুর সরকারি কলেজ এলাকায় জড়ো হতে থাকে। পরে বিকেল ৩টার দিকে শেরপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ গেইট এলাকা থেকে তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনে নানা স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে কলেজমোড়-খরমপুর-চকবাজার হয়ে থানা মোড় এলাকায় আসে। এ সময় আগে থেকেই নিউমার্কেট মোড় এলাকায় অবস্থান করছিল ছাত্রলীগের সদস্যরা।
কোটা আন্দোলনকারীদের দাবি, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর বিনা উসকানিতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে দুপক্ষের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী সদস্য ছিলেন। পরে আন্দোলনকারীদের সরব উপস্থিতির মুখে একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে। পুলিশ উভয়পক্ষকে সহাবস্থানের চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শহরের থানা মোড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু স্কয়ার সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় ৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ একজন আন্দোলনকারীকে আটক করলে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে এবং তা সংঘর্ষে রূপ নেয় হয়। এ সময় পুলিশ শতাধিক টেয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে।
এ ব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হোসেন বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আন্দোলনকারীদের হামলায় আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা খুবই গুরুতর। থানায় নিয়মিত মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
মন্তব্য করুন