উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানির তীব্র স্রোত আর টানা বর্ষণে পদ্মা নদী টুইটম্বর হয়ে তীর উপচে পানি প্রবেশ করেছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে। পানির তীব্র স্রোতে আবারো দেখা দিয়েছে পদ্মার ভাঙন।
উপজেলা হারুকান্দী এলাকায় প্রবল স্রোতে নদী তীরবর্তীতে লালন সাঁইজির ভক্তদের মিলনমেলার গুরুকুল আশ্রমের ঘরসহ দুটি বসতভিটা, বিভিন্ন আসবাবপত্র পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শাহিনুর রহমান। তিনি বলেন, আমি ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে নদীর পাড় পানির নিচে অবস্থান করছে বিধায় এ সময় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করলে তা কার্যকর হবে না। কাজ করার উপযোগী হলেই আমরা আপদকালীন জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করব।
এর আগে রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরের দিকে ভাঙন শুরু হয়।
উপজেলার হারুকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার হারুকান্দি ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামে পদ্মার তীরবর্তীতে অবস্থিত লালন সাঁইজির ভক্তদের মিলনমেলার আশ্রয়স্থল গুরুকুল আশ্রম। এখানের ঘরসহ বসতভিটার অর্ধেক ও একই গ্রামের মো. চুন্নু মিয়া এবং মো. নান্নু মিয়ার বসতবাড়ির অর্ধেকসহ দুটি ঘর ও আসবাবপত্র পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
হারুকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন বলেন, গুরুকুল আশ্রমের ঘরসহ আরও দুই বাড়ি ও ঘর বিলীন হয়ে গেছে। আমি ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থা অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছি এবং লিখিতভাবেও আবেদন করব। যেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহযোগিতা করা যায়।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দীন কালবেলাকে বলেন, নদীভাঙনের খবর পেয়ে আমার উপসহকারী প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পাঠিয়েছি। ভাঙনকবলিত হারুকান্দি এলাকাটি নিচু হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে বেশিরভাগ অংশে নদীর পাড় পানির নিচে অবস্থান করে। ফলে এ সময় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে সুফল পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, এ মুহূর্তে পদ্মা নদীর পানি স্থিতি আছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, খুব শিগগির পদ্মার পানি কিছুটা হ্রাস পাবে। আমরা পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ মজুদ রেখেছি। বন্যার পানি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসা মাত্র আমরা জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে মেরামত কাজ বাস্তবায়ন করব।
প্রকৌশলী মাঈন উদ্দীন আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা আন্দারমানিক ঘাট এলাকার উজানে ও ভাটিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছি। এ ছাড়া কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের মালুচী এলাকায় ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩৬ মিটার এলাকা আপদকালীন জিও ব্যাগের কাজ হাতে নিয়েছি। পদ্মার পানি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসলে আমরা হরিরামপুরের আরও কিছু জায়গায় মেরামত কাজ বাস্তবায়ন করব।