ভারতের দিল্লিতে কিডনি বেচাকেনা ও অবৈধভাবে মানব শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন রাসেল আহমেদ নামে এক বাংলাদেশি যুবক।
গ্রেপ্তার রাসেল আহমেদ কুষ্টিয়া ভেড়ামারার ধরমপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কিডনি কেনাবেচা এবং অবৈধভাবে মানব শরীরে প্রতিস্থাপন কার্যে লিপ্ত বাংলাদেশি এবং ভারতীয় সম্মিলিত একটি চক্র সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে পুলিশ চিকিৎসক বিজয়া কুমারীসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে। এদের মধ্যে তার সহযোগী হিসেবে কুষ্টিয়ার রাসেল আহমেদ, ঢাকার বাসিন্দা সুমন মিয়া ও মোহাম্মদ রোকনউদ্দিনকে আটক করে। গ্রেপ্তারের সময় রাসেলের কক্ষ থেকে কিডনিদাতা ও গ্রহীতাদের দুটি ডায়েরি ও ৯টি পাসপোর্ট এবং রোকনের কাছ থেকে ২০টি স্ট্যাম্প জব্দ করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাসেলের এক সহপাঠী স্বপনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাসেল ২০১৪ সালে ধরমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছে। সে কিছুদিন ঢাকায় পড়াশোনাও করেছে। সেখান থেকে দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর আগে ভারতে চলে যায়। আমরা ফেসবুক ও গণমাধ্যমে তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি দেখেছি। এটা শুনে আমাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মত মনে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে সে এখানে এসে কিছুদিন ছিল। তারপর আবার চলে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক আত্মীয় কালবেলাকে বলেন, শুনেছি দিল্লির ইন্দ্রপুরের এপোলো হাসপাতালে রাসেল দোভাষী হিসেবে কাজ করত। সে ঢাকায় বিয়ে করেছে, পরিবার ওখানেই থাকে। ঢাকায় তার ফ্ল্যাট বাড়ি ও গাড়ি আছে। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসে। আর তার মেজ ভাই সোহেল রানাও তার সঙ্গে মাঝে মাঝে ভারতে দেখা করে। রাসেল ধরা পড়ার পর সে বাংলাদেশে চলে এসেছে। শুনেছি কুষ্টিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন ভারতে গিয়ে তার শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করত। দেশে এসে খুশি হয়ে তারাই আবার রাসেলকে মানবতার ফেরিওয়ালা উপাধি দিত।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাসেলের মেজো ভাই সোহেল রানা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি অসুস্থতার জন্য ভারতে যেতাম। বর্তমানে আমি রূপপুর পারমাণবিকে কর্মরত আছি।
রাসেলের মা আলেকা খাতুন বলেন,আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে ভারতে থাকে। শুনেছি সেখানকার এক হাসপাতালে চাকরি করে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। ঈদুল ফিতরের আগে তার বাড়িতে আসার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি চুপ থাকেন।
ঢাকায় পূবালী ব্যাংকে কর্মরত রাসেলের বড় ভাই মাসুদ রানা বলেন, তার সঙ্গে আমাদের কোনো পারিবারিক সম্পর্ক নেই। আপনাদের মতো আমরাও বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি তার গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা। আমরা চাই অপরাধ করলে তার শাস্তি হোক।
ভেড়ামারা থানার ওসি জহুরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে রাসেলের গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। বিগত কয়েক বছর ধরেই সে ভারতে থাকে। এলাকায় এলে স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করে।