বরিশালের মুলাদীতে নদীভাঙন থেকে বিদ্যালয় রক্ষার জন্য বরাদ্দ করা জিও ব্যাগ প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পুকুর ও বাড়ির ভাঙনরোধের জন্য নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
তবে বিদ্যালয়ের সভাপতি জসিম উদ্দীন জিও ব্যাগ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ঠিকাদারের অভিযোগ, জিও ব্যাগ নেওয়ার সময় বাধা দিলে সভাপতির লোকজন শ্রমিকদের মারধর করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য তৈরি করা প্রায় ৩০০ জিও ব্যাগ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে বিদ্যালয়ের সভাপতি জসিম উদ্দীনের লোকজন জোরপূর্বক নিয়ে যান। তার লোকজন ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভর্তি করে জিও ব্যাগ নেওয়ার একটি ভিডিও এলাকায় ভাইরাল হয়েছে।
সফিপুর ব্রজমোহন গ্রামের বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, জয়ন্তী নদীর ভাঙন থেকে সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ব্রজমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষার জন্য ৩০০ মিটার জায়গায় জিও ব্যাগ বরাদ্দ করা হয়।
তিনি বলেন, ঠিকাদারের লোকজন ব্যাগভর্তি করে নদীর পাড়ে জড়ো করেন। সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জসিমের লোকজন ট্রলারবোঝাই করে প্রায় ৩০০ জিও ব্যাগ নিয়ে যান। ব্যাগগুলো বিদ্যালয় এলাকা থেকে প্রায় ৮০০ মিটার দূরে সভাপতির পুকুর ও বাড়ি রক্ষার জন্য ফেলা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক টুলু সর্দার বলেন, নদীভাঙন থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা জরুরি। সভাপতি জিও ব্যাগ নেওয়ায় কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের ভাঙন ঝুঁকি বেড়েছে।
ঠিকাদার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, সভাপতি জসিম এর আগে তার পুকুর ও বাড়ি রক্ষার জন্য সেখানে জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বরাদ্দ স্থান ছাড়া অন্য কোথাও জিও ব্যাগ ফেলা যাবে না জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং জোরপূর্বক জিও ব্যাগ নিয়ে যান। এতে বাধা দিলে তার লোকজন শ্রমিকদের মারধর করেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জসিম বলেন, আমি ঢাকায় রয়েছি। জিও ব্যাগ নেওয়ার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাবুগঞ্জ উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুশফিকুর রহমান শুভ বলেন, সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রক্ষার জন্য জিও ব্যাগ বরাদ্দ হয়। ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ঠিকাদারের লোকজনকে মারধর করে জোরপূর্বক ব্যাগ নিয়েছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুলাদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আপনাদের (কালবেলা) মাধ্যমেই জানলাম। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি জেনেছি। বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রভাব খাটিয়ে জিও ব্যাগ নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন