শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে বাবুল বেপারী নামে এক রোগীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে সদর হাসপাতালের তৃতীয় তলার মেডিসিন ওয়ার্ডের টয়লেট থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
বাবুল বেপারী বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার পূর্ব তয়কা এলাকার আলী বেপারীর ছেলে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন উপজেলার পূর্ব তয়কা এলাকার বাবুল বেপারী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার বৃদ্ধা মা রোকেয়া বেগম। মধ্যরাতে মা রোকেয়া বেগম ঘুমিয়ে পড়লে ঘুম থেকে উঠে বিছানায় দেখতে পান ছেলে নেই। এরপর তিনি তার ছেলেকে হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করেন এবং একপর্যায়ে বিষয়টি নার্সদের জানান।
তবে এরপরও তার কোনো খোঁজ না পেলে শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়ি চলে যান রোকেয়া বেগম। পরে বিকেলে আবারও হাসপাতালে এসে ছেলের খোঁজ করেন। এরপর শনিবার সকালে অন্য রোগীরা টয়লেটে গেলে বাবু বেপারীকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখলে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।
বাবু বেপারীর ভাতিজি হেনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমার চাচা বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিল। তিনি টয়লেটে গিয়ে যদি মারাও যান, তাহলে এ দুদিন বাথরুম পরিষ্কার করা হয়নি। বাথরুম পরিষ্কার করলে ঠিকই আমার চাচাকে খুঁজে পাওয়া যেত। তারা চাচাকে না খুঁজে উল্টো রোগীকে পাওয়া যায়নি বলে আমার দাদিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
নিহত বাবুর মা রোকেয়া বেগম বলেন, আমার ছেলে অসুস্থ হওয়ায় তাকে নিয়ে হাসপাতালে আসছি। টয়লেটের কথা বলে বাহির হওয়ার পর আর খুঁজে পাইনি। তাকে না পেয়ে নার্সদের জানাই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আমার ছেলেকে কোথাও খুঁজে পাইনি। আমি যখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাই তখন তারা খুঁজলে হয়তো আমার ছেলে বেঁচে যেত। যখন ছেলেকে খুঁজে পেলাম তখন আমার ছেলে আর বেঁচে নেই।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ওই রোগী উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। এ ছাড়াও তার হৃদরোগের সমস্যা ছিল। কেউ খেয়াল না করায় হয়তো হৃদরোগের কারণে টয়লেটে গিয়ে তার মৃত্যু হতে পারে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন