কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের প্রধান যানবাহন সিএনজিচালিত অটোরিকশা। এ বাহন দিয়েই প্রতিদিন এ সড়কে নানা প্রয়োজনে কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। তবে গত বুধবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনে সমস্যা দেখা দেওয়ায় সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের সংকট দেখা দেয়।
এতে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল থেকে গ্যাস রিফিল করতে না পারায় সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংকট দেখা দেয়। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এ সড়কে জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করা সাধারণ যাত্রীদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা যাতায়াতের নির্ধারিত সিএনজি স্ট্যান্ডে সিএনজিচালিত কোন অটোরিকশা নেই। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দিয়ে তিনগুণ ভাড়ায় ও বেশি সময় ব্যয়ে জরুরি কাজে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা বেশি থাকলেও চার্জ স্বল্পতার কারণে কমে এসেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যাও। এতে জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করা যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
এহসানুল ইসলাম নামে এক যাত্রী কালবেলাকে বলেন, সিএনজি নেই, তিনগুণ ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা করে কুমিল্লা যেতে হচ্ছে। এখন অটোরিকশার সংখ্যাও কমে এসেছে। শুনেছি সকাল থেকেই এ সড়কে সিএনজি না থাকায় যাত্রীদের অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে।
আরেক যাত্রী রহিমা সুলতানা কালবেলাকে বলেন, শুনছি সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। যে কারণে সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নেই। লোকজন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা দিয়ে যাতায়াত করছে। অটোরিকশা দিয়ে দীর্ঘ পথ যাতায়াতে কষ্ট, সময় ও অর্থ দুটোই বেশি লাগছে।
কুমিল্লার যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা যাত্রী মনির হোসেন, ইউনুস মিয়া, ফয়সল আহমেদ ও রোকসানা বেগমসহ আরও কয়েকজন যাত্রী কালবেলাকে বলেন, একঘণ্টা ধরে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। সকাল থেকেই সড়কে সিএনজি নেই। সারাদিন কিছু ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাত্রী আনা-নেওয়ার জন্য পাওয়া গেলেও এখন এটিরও সংকট দেখা দিয়েছে। শুনছি অটোরিকশাও চার্জ স্বল্পতার কারণে কমে গেছে। এখন জানি না কীভাবে যাব।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক হুমায়ুন কবির কালবেলাকে বলেন, ‘আমি এ সড়কে গাড়ি চালাই না, উপজেলার স্থানীয় রাস্তায় গাড়ি চালাই। তবে আজকে এ সড়কে সিএনজি না থাকায় অন্যান্য অটোরিকশা ড্রাইভারদের মতো আমিও এ সড়কে অটোরিকশা চালাচ্ছি।’
মাস্টার এণ্ড সন্স ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন কালবেলাকে বলেন, বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া গ্যাস সংকট এখনো ঠিক হয়নি। চট্টগ্রামের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট লাইনে পাইপ ফেটে যাওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা সিএনজি চালিত কোন গাড়িতে গ্যাস দিতে পারছি না। তবে কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে খুব শিগগিরই এর সমাধান হবে।
মল্লিকা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার আজিজুর রহমান সুজন কালবেলাকে বলেন, এমনিতেও পুরো দিন আমরা সিএনজি গ্রাহকদের গ্যাস দিতে পারি না, লাইনে গ্যাস সরবরাহ কম থাকে। তবে গত বুধবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট লাইনে পাইপ ফেটে যাওয়ায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এই সমস্যার সমাধানে কাজ চলছে। আশা করছি শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।
মন্তব্য করুন