বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙালি নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর ভাঙনে গাছপালা এবং বাড়ির আঙ্গিনাসহ বসতভিটার প্রায় ২৫ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চর ডোমকান্দি গ্রামের বাসিন্দা হান্নান সরকারের বসতভিটার একাংশ বিলীন হয়ে গেছে।
বসতভিটার একটি রান্নাঘর, বেশ কয়েকটি বড় বড় গাছ এবং বাঁশঝাড় বাঙালি নদীতে চলে গেছে। এ ছাড়া বৈদ্যুতিক খুঁটিও ভেঙে পড়েছে নদীতে। এ ছাড়া ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে চর ডোমকান্দি জামে মসজিদ ও গ্রামের অন্তত ২০টি পরিবার।
স্থানীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবি কনস্ট্রাকশন ৫০০ মিটার নদীর তীর রক্ষার কাজ শুরু করে। বর্ষার আগে কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু তারা বর্ষার সময়ে কাজ শুরু করে। এতে তারা শুধুমাত্র নদীর গাইড ওয়ালের কাজ করে এবং বেড ও জিও বিছিয়ে রেখে কাজ বন্ধ রাখে। পরে বর্ষা শুরু হলে বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়।
বাঙালি নদী ভাঙনের শিকার হান্নান সরকার বলেন, ১৯৮৮ সালের বন্যার আগে বাড়িটি করেছিলাম। এতদিনের বসতভিটা আমার বাঙালি নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে দুয়েকদিনের আমার বাড়িঘর ভেঙে যাবে। এতদিনের বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে বাড়ি করতে আমার খুবই খারাপ লাগছে।
একই গ্রামের বজলু প্রামানিক জানান, মূলত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের কোনো অগ্রগতি না থাকায় নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে বেশি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবি কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আজম জানান, ডোমকান্দি এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ওই জায়গায় ব্লক তৈরি করা সম্ভব হয়নি। অন্য জয়গায় ব্লক তৈরি করে নৌকাযোগে আনতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে ড্রাম পিং, বেড ও জিও বিছানো হয়েছে। নদী ভাঙন রক্ষার্থে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তারিফুল ইসলাম বলেন, সংবাদ পাওয়ার পরপরই স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ারুত তারিক মোহাম্মদকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
বগুড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক কালবেলা বলেন, আমাদের হাতে ডামপিং ব্লক ও বস্তা মজুদ আছে, সেগুলো ফেলার নির্দেশ দিয়েছি। আমাদের লোক সেখানে গিয়েছে তারা ভাঙনরোধে কাজ শুরু করবে।
মন্তব্য করুন