রংপুর মিঠাপুকুরের মিয়ারহাট আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৮ জুলাই) সকালে উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মিয়ারহাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে অভিযোগের প্রেক্ষিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
এর আগে শুক্রবার (৫ জুলাই) বিধি বহির্ভূতভাবে টেন্ডার ছাড়াই প্রতিষ্ঠানের মাঠের একটি গাছ বিক্রির ঘটনায় এলাকাবাসী গাছের গোলাই ভর্তি ভ্যান আটক করলে পুলিশ গাছের গোলাইগুলো ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় দেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত সোহানুর রহমান জানান, মিয়ারহাট আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. বাদল মিয়া ও সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং বিদ্যালয়ের গাছ চুরির প্রতিবাদে আমরা এলাকাবাসী ও সাবেক বর্তমান শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করেছি। আমরা চাই অবিলম্বে এই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি বাতিল করে অভিভাবক সদস্যদের দিয়ে নির্বাচিত কমিটি গঠন করা হোক।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে রংপুর জেলা প্রশাসক, রংপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, মিঠাপুকুর ইউএনও ও মিঠাপুকুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগ স্থানীয়দের।
মিয়ারহাট আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বরখাস্ত হওয়া প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ও কাফ্রিখাল ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন জানান, ২০১৫ সাল থেকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আমাকে বরখাস্ত করে রাখা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ১৮০ দিনের বেশি কোন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা যাবে নাহ। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিধি বহির্ভূতভাবে নিজের মনগড়া লোক দিয়ে এডহক কমিটি গঠন করে আমাকে একটানা নয় বছর থেকে বরখাস্ত করে রেখেছে।
দাতা সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ দেওয়ার নাম করে আমাদের থেকে জমি ও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েও চাকরি দেননি অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক।
সুধী সমাজের রাকিবুল ইসলাম রিপন ও নাসিরুল হক রাজু বলেন, নিয়োগ বাণিজ্যের ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমরা তার হিসাব চাই। টেন্ডার বিহীন চুরি করে গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিদ্যালয়টির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাদল মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
মিঠাপুকুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মমিন মন্ডল জানান, আজকের মানববন্ধনের সার্বিক বিষয়ে আমার জানা নেই। গাছ বিক্রির বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রংপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এনায়েত হোসেন মুঠোফোনে জানান, আমি মিটিংয়ে আছি। টেন্ডার ছাড়াই গাছ কাটার বিষয়ে আমার অফিসে অভিযোগ দিয়ে থাকলে আমি বিষয়টি তদন্ত করবো। মানববন্ধনের বিষয়ে আমার জানা নেই।
মন্তব্য করুন