সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকর্মী শিক্ষকের ঘুমিয়ে পড়ার ছবি তোলার ঘটনায় সুশীল কুমার মাহাতো নামে এক শিক্ষককে মারধরের প্রমাণ পেয়েছেন তদন্ত কমিটি।
আর এ ঘটনায় ওই দুই শিক্ষক দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও বিশ্বনাথ কুমার মাহাতোর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাটি করেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনর রশীদ।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুসাব্বির হোসেন খান।
তিনি জানিয়েছেন, গত মাসের ৯ জুন ভুক্তভোগী শিক্ষকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফ আলী ও মো. মনিরুজ্জামান ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটি শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতোকে মারধরের সত্যতা পেয়েছেন। আর তদন্ত প্রতিবেদন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া এবং অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হলে গত ৪ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনর রশীদ স্যার ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় করেন এবং আমাকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেন।
মারধরের শিকার শিক্ষক সুশীল মাহাতো বলেন, অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও বিশ্বনাথ কুমার মাহাতো সহোদর ভাই। তারা বিদ্যালয় চলাকালে মাসের পর মাস শ্রেণিকক্ষে, অফিস কক্ষে ও পার্শ্ববর্তী মন্দিরে গিয়ে বেঘোরে ঘুমানোর ঘুমান, যা এ এলাকার সবাই জানে।
এর আগে এ নিয়ে জাতীয় দৈনিক কালবেলায় ভিডিও প্রকাশ হলেও বিভাগীয় তদন্ত হয়। তারপর অদৃশ্য শক্তির কারণে তারা দুই ভাই দায়মুক্তি নিয়েছেন। এবারও তারা দায় মুক্তি নিতে এরই মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এমনকি তারা বলে বেড়াচ্ছেন পূর্বে দুই লাখ দিয়ে ম্যানেজ করেছি। এবার না হয় চার লাখ লাগবে।
অবশ্য, অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষক দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও বিশ্বনাথ কুমার মাহাতো বলেন, আপনারা যা পারেন তাই লিখেন। আগে দুই লাখ দিয়ে ম্যানেজ করেছি। এবার না হয় চার লাখ লাগবে।
বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নৃপেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ঘটনার সময় তিনি ক্লাস নিচ্ছিলেন। পরে অফিস কক্ষে এসে দেখতে পান সুশীল কুমার মাহাতো মেঝেতে পড়ে আছেন। আর তাকে কিল-ঘুসি মারছেন দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও তার ভাই বিশ্বনাথ কুমার মাহাতো। পরে তিনি ও সহকারী শিক্ষক প্রবীণ কুমার মাহাতো দেবেন্দ্র ও বিশ্বনাথকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, শিক্ষক দেবেন্দ্র কুমার বিদ্যালয়ের পাশে খড়ের গাদার মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় মোবাইল ফোনে তার ঘুমন্ত অবস্থার ছবি তোলেন অপর শিক্ষক সুশীল কুমার। এ ধরনের সন্দেহবশত তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে রোববার সকালে বিদ্যালয় চলাকালে সুশীল মাহাতোকে মারধর করেন দেবেন্দ্র কুমার ও বিশ্বনাথ কুমার। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়।
মন্তব্য করুন