কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া চড়াপড়া সড়কের শিলখালী খালের ওপর এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি সংযোগ সড়কের অভাবে কোনো কাজে আসছে না।
ব্রিজের কাজ শেষ না হওয়ায় নড়বড়ে একটি কাঠের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন স্থানীয়রা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বারবাকিয়া চড়াপড়া সড়কের শিলখালী খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ব্রিজটি। কাজ শেষ হলেও দুই পাশে মাটি দিয়ে চলাচলের কোনো সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়নি।
ব্রিজটি নির্মাণের সময় তৈরি করা হয়েছিল একটি কাঠের পুল। নড়বড়ে কাঠের পুলই এখন চলাচলের একমাত্র ভরসা। এতে পারাপারে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পা পিছলে খালে পড়ছেন পথচারীরা।
স্থানীয়রা জানান, শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়সহ আশেপাশের পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর একমাত্র যাতায়াতের পথ চড়পাড়া-বারবাকিয়া সড়ক। শিলখালী ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের একাংশের সহজ যাতায়াতের পথও এটি। কিন্তু ব্রিজের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় গত দুই বছর ধরে সড়কটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
বর্তমানে ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাই বিকল্প কাঠের পুল ব্যবহার করে খাল পার হতে হচ্ছে। এটি পারাপারে প্রতিদিনই কেউ না কেউ খালে পড়ে আহত হচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পেকুয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, যান চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় শিলখালী খালের ওপর প্রায় এক কোটি টাকার বরাদ্দে ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ পায় চট্টগ্রামের নিপা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পুরোনো ব্রিজ ভেঙে ২০২২-২৩ অর্থবছরে নতুন ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। যার ৮০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, বর্ষা মৌসুমে খালে পানি বাড়ায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে তাদের স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক সময় অভিভাবক বা স্থানীয়রা তাদের পারাপারে সহযোগিতা করছে। দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্রিজের দুই পাশে মাটি দিয়ে সংযোগ সড়ক চালুর দাবি তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা কাজীউল ইনসান বলেন, সংযোগ সড়ক তৈরি করে দিলে আপাতত ব্রিজটি ব্যবহার করা যেত। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে অন্তত ১০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। ব্রিজের কারণে সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এ এলাকার অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিপা এন্টারপ্রাইজের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পেকুয়া উপজেলার প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ বলেন, ব্রিজের অ্যাপ্রোজ রোডের ভ্যারিয়েশন অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে ব্রিজের বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি গত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় অবগত করছিলাম। বরাদ্দ পেলে বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে আমাকে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন