বাগানে যত্ন করে ফোটানো ফুলের সৌন্দর্যের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় অযত্নে পথের ধারে ফুটে থাকা ফুল। গ্রামীণ মেঠোপথে আসা-যাওয়ার পথে পথিকের মন কেড়ে নিতে এসব পথ ফুল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে প্রকৃতিতে। এমনই এক পথের ফুল বেড়েলা। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার প্রকৃতিতে মুগ্ধতা বিলাচ্ছে এ বেড়েলা ফুল।
বেড়েলা এক ধরনের আগাছা। এর বৈজ্ঞানিক নাম সিডা করডিফোলিয়া। এটি হল ম্যালো পরিবারভুক্ত একটি মালভাসি ফুলের প্রজাতি। এটি মধ্য আমেরিকায় জন্ম হয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে এ উদ্ভিদটি বর্তমানে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেখতে পাওয়া যায়।
এ ছাড়া বেড়েলা হারবাল চিকিৎসায় মানুষের নানা রোগে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ উদ্ভিদটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ। এদের কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। এর ছোট ফুল দেখতে বেশ সুন্দর হয়ে থাকে।
উপজেলার বিভিন্ন মেঠোপথ ঘুরে দেখা গেছে, পথের পাশে সবুজ পাতার মাঝখানে বেড়েলা ফুলের হলুদ হাসিতে বিমূর্ত হয়ে আছে প্রকৃতি। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়ের পাড়, পুকুর ও দিঘির পাড়েও ফুটে আছে বেড়েলা ফুল।
এ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন আসা-যাওয়ার পথে নানা শ্রেণির মানুষ। কেউ কেউ তুলেও নিচ্ছেন ফুল। ছোট ছোট শিশুরাও খেলছে মনমাতানো এ ফুল নিয়ে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, বেড়েলা উদ্ভিদটির রয়েছে নানাবিধ ঔষধি গুণ। এ উদ্ভিদের মূল, ছাল, পাতা ও ফুল ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ উদ্ভিদের মূলের ছাল হৃদরোগে ব্যবহৃত হয়। হৃৎযন্ত্রের দুর্বলতা সারাতে বেড়েলার অসামান্য ঔষধি গুণ রয়েছে। প্রস্রাবের রোগ সারাতে এ গাছের মূলের ছাল ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
খাবার হজমে সমস্যা, মহিলাদের রক্তস্রাব নিরাময় করতে এ উদ্ভিদ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মানবদেহের ফোঁড়া পাকাতে ও সারাতে বেড়েলার ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া নানা রোগে ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে বেড়েলা।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি চিকিৎসক ডা. সোহেল রানা কালবেলাকে বলেন, বেড়েলা গাছ ২ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। এ গাছের কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। তবে যে বেড়েলার পাতা নরম ও মসৃণ এবং ভেলভেটের মতো হৃৎপিণ্ডাকার সেই গাছই মানুষের নানা রোগ সারাতে ব্যবহার করা হয়।
তিনি বলেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে কোনো উদ্ভিদই ওষধ হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।
মন্তব্য করুন