বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এ দেশের বেশিরভাগ মানুষের পেশা কৃষি। কৃষির ওপর নির্ভর করে চলে এ দেশের অর্থনীতি। একসময় গরু দিয়ে এ দেশে হাল চাষ করা হতো। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় পালটে গেছে চিত্র। যান্ত্রিক ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করায় গরুর হাল এখন বিলুপ্ত প্রায়।
আজ (৭ জুলাই) রবিবার সকালের দিকে কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ছিট রাজীব গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম (মুন্সি) কে গরু দিয়ে হাল চাষ করতে দেখা যায়। হাল চাষের ছবি তুলতে দেখে তিনি গরুর হাল দাড় করে বলেন আমি একজন জাত (হালুয়া) কৃষক, অতীতের গরু দিয়ে হাল চাষের গল্প বলতে থাকেন।
কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৬৫ বছর বয়সী কৃষক সাইদুল মুন্সি বলেন, আমি ১২ বছর বয়স থেকেই গরুর হাল দিয়ে জমি চাষ করি। আগে ১২-১৩ বিঘা জমি গরু দিয়ে চাষ করতাম। এখন বয়সের কারণে সম্ভব হয় না। এর আগে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির শবদের সঙ্গে চাষিদের ভাওয়াইয়া গানের সুরে পুরো মাঠ মুখরিত হতো। সবাই গরু নিয়ে মাঠে গিয়ে চাষ দিতাম।
তিনি বলেন, এখন সব গৃহস্থ গরুর হাল বাদ দিয়ে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করে। কারণ যে দিন জমি চাষ কর হয় ঐ দিনেই ক্ষেত লাগানো যায়। তবে গরুর হাল দিয়ে জমি চাষ করতে খরচও যেমন বেশি লাগে এবং জমি তৈরি করতে কমপক্ষে ১৫-২০ দিন সময় লাগায় জমির মালিকরা গরুর হাল বাদ দিয়ে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করে। এজন্য এখন গরুর হাল খুব কম চোখে পড়ে।
রনচন্ডী ইউনিয়নের ধাইজান পাড়া গ্রামের সেকেন্দার আলী তাজু বলেন, আমার এখনো গরুর হাল আছে। তবে জমি তৈরির ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগে। এজন্য গরুর হাল দিয়ে জমি চাষ করা বাদ দিয়েছি।
উপজেলা কৃষিবিদ লোকমান আলম বলেন, কৃষক এখন যান্ত্রিক চাষাবাদের দিকে আগ্রহী হচ্ছে। গরু দিয়ে চাষ করতে গেলে সময় ও অর্থ দুটোই বেশি পড়ে। ফলে গরু দিয়ে চাষবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে। যান্ত্রিক চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছে তারা।
মন্তব্য করুন