ত্রাণের নৌকা দেখেই কলা গাছের ভেলা এবং কাঠের তৈরি ছোট ছোট নৌকা নিয়ে ছুটে এসেছেন বন্যাকবলিত মানুষজন। গলা থেকে কোমর পানি ভেঙেও অনেকে ত্রাণ নিতে আসেন। কিন্তু এত কষ্ট করার পরও সবার ভাগ্যে জোটেনি ত্রাণ।
বাংলাদেশ খাদ্য সহায়তা ঝুড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে নির্ধারিত ও কার্ডপ্রাপ্ত ৩৫০ জনকে ত্রাণ দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরও ত্রাণের আশায় ছিলেন, আরও ১০০-১৫০ জন। ত্রাণ না পেয়ে চরম হতাশা নিয়ে তারা ফেরেন কোমর ও গলা পানি ভেঙে।
রোববার (৭ জুলাই) বিকেলে এই দৃশ্যের দেখা মেলে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা রঙ্গারচর ইউনিয়নের হরিনাপাটি গ্রামে। গ্রামের পার্শ্ববর্তী কাংলার হাওরে নৌকা ভিড়তেই নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সকলে ছুটে এসেছিলেন।
ত্রাণ বঞ্চিতরা জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় দফা মিলে প্রায় ২০ দিন ধরে তারা পানিবন্দি রয়েছেন। সেজন্য আয় রোজগারও নেই তেমন। খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যারা ত্রাণ পেয়েছে তারা খুশি হয়ে ফিরলেও অনেকেই ফিরছেন শূন্য হাতে।
ত্রাণ বঞ্চিত মমিনা বেগম জানান, গলা পানি সাঁতরে এসেছি ত্রাণের জন্য। কিন্তু কার্ড না থাকায় ত্রাণ দেয়নি। এত কষ্ট করে এসে এখন ত্রাণ না পাওয়া খুব খারাপ লাগছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে আমাদের।
ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাদ মিয়া জানান, আশা নিয়ে নৌকা দেখে এসেছিলাম একটা বস্তা পাব বলে। কিন্তু নাম না থাকায় আমাকে ত্রাণ দেননি তারা। পানিবন্দি হওয়ার পর থেকেই কাজ নেই, আয়-রোজগারও নেই সেজন্য। অনেক কষ্ট করে দিনযাপন করছি।
এদিকে ত্রাণ বিতরণ শেষে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া জানালেন, বাংলাদেশ খাদ্য সহায়তা ঝুড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে রঙ্গারচর ইউনিয়নে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। হরিনাপাটি, চানপুর, চাতলপাড় ও রঙ্গারচর গ্রামের বন্যার্ত ৩৫০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বন্যায় রঙ্গারচর ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে। কাজের অভাবে খাদ্য কষ্টে আছে মানুষজন। তাদের কষ্ট লাঘব করার জন্য অনেকেই খাদ্য সহায়তা প্রদান করছেন।
মন্তব্য করুন