রাসেল ভাইপার সাপে কাটা রোগীর তথ্য ও বক্তব্য নিতে যাওয়া এক সাংবাদিককে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুমায়ুন কবিরকে প্রত্যাহারের দাবি করেছেন। সংবাদকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণের প্রতিবাদ ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার দাবিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন ফরিদপুরের কর্মরত সাংবাদিকরা।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে ফরিদপুরের কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম পিকুলসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা।
হেনস্তার শিকার ফটো সাংবাদিকের নাম শেখ নয়ন (৩১)। তিনি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ফরিদপুর প্রতিনিধি এসএম মাসুদুর রহমানের ক্যামেরাপারসন।
জানা যায়, শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালের পুরোনো ভবনের দোতলায় অবস্থিত পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে বেসরকারি চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন শেখ নয়ন রাসেল ভাইপার সাপে কাটা রোগীর ভিডিও করতে যান। এ সময় তাকে ছবি তুলতে বাধা এবং তার ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন কর্মরত আনসার সদস্য সুব্রত দাস। একপর্যায়ে শেখ নয়নকে ওই ভবনের নিচ তলায় আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আসাদুল্লাহ সুমনের কক্ষে নিয়ে ১ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
এসএম মাসুদুর রহমান জানান, দুপুর ২টার পর হাসপাতালটির পুরোনো ভবনের দোতলায় রাসেল ভাইপারে কামড়ানো এক রোগীর তথ্য সংগ্রহে যান নয়ন। তথ্য ও বক্তব্য ধারণের সময় সেখানে কর্মরত আনসার সদস্য সুব্রত দাস তাকে বাধা দেন এবং ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আড়াইটার দিকে নয়নকে ওই ভবনের নিচ তলায় আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আসাদুল্লাহ সুমনের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখেন আনসার সদস্যরা। প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর কোতোয়ালি থানার এসআই শাহরিয়ার হাসপাতালে এসে নয়নকে ছাড়িয়ে আনেন।
মোবাইল ফোনে নয়নকে আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে, হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হুমায়ুন কবির কালবেলাকে বলেন, হাসপাতালের ভেতরে যেকোনো চিত্র ধারণে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি প্রয়োজন হয়। তিনি (নয়ন) সেই অনুমতি নেননি।
সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া চিত্র ধারণে অনুমতি প্রয়োজন হয় কি না এমন প্রশ্নে পরিচালক জানান, মন্ত্রণালয়ের নিষেধ রয়েছে।
এ দিকে এ ঘটনায় ফরিদপুরে কর্মরত সাংবাদিকরা জরুরি বৈঠক করে হাসপাতালের পরিচালক হুমায়ুন কবিরের অপসারণ দাবি করে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদারের নিকট স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় স্বাস্থ্য খাতের ইতিবাচক সংবাদ বর্জনেরও ডাক দেন সাংবাদিকরা।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহাসান তালুকদার কালবেলাকে জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর একটা স্মারকলিপি পেয়েছি, সেটি আমরা পাঠিয়ে দেব।
এর আগেও হাসপাতালটির পরিচালক ডা. হুমায়নের বিরুদ্ধে একাধিকবার সময় টেলিভিশনের রিপোর্টারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে অসদাচারণের অভিযোগ রয়েছে।
মন্তব্য করুন