কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সড়কে যাতায়াত করতে গিয়ে রোদ ঝড় বৃষ্টিতে সাধারণ যাত্রীরা যেন ভোগান্তিতে না পড়ে সেই দিক বিবেচনা করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর বিভিন্ন বাসস্টপে সাধারণ যাত্রীদের জন্য সড়কের পাশে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করেছেন। যানবাহনের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীরা এসব ছাউনিতে বসে বিশ্রাম নেন।
সাধারণ যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য তৈরি করা যাত্রী ছাউনিগুলোর বেশিরভাগই এক শ্রেণির লোকজন তাদের ব্যবসা সাজিয়ে দখল করে রাখার অভিযোগ ওঠে।
ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কালিকাপ্রসাদ বাসস্ট্যান্ডে ৩টি যাত্রী ছাউনি রয়েছে এবং আকবরনগর-মিরারচর বাসস্ট্যান্ডে রয়েছে দুটি যাত্রী ছাউনি।
কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের কালিকাপ্রসাদ বাসস্ট্যান্ড ও আকবরনগর-মিরারচর বাসস্ট্যান্ডের এসব যাত্রী ছাউনিগুলো অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকায় বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সেগুলো দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এসব অভিযোগের সত্যতা জানতে সরেজমিনে শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুরে কালিকাপ্রসাদ ও আকবরনগর মিরারচর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, কালিকাপ্রসাদ বাসস্ট্যান্ডের ৩টি যাত্রী ছাউনির মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের নির্মাণ করা ছাউনি দখল করে দুটি ফলের দোকান তাদের ব্যবসা সাজিয়ে বসেছে। ফলে ছাউনির ভেতর ও বাইরে যাত্রী বসার ও দাঁড়ানোর পরিবেশ নেই। এই ছাউনির পেছনের সাইডে সাঁটারযুক্ত দুটি দোকানও রয়েছে।
ওই দুটি দোকান প্রতি বছর ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুই বছরের চুক্তিতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইউছুফ খান ও জুয়েল মিয়ার কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. লিটন মিয়া। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর জরাজীর্ণ ছাউনিটি সংস্কার করে পরিষদের উন্নয়নের জন্য নিয়মনীতি অনুসরণ করে দোকান দুটি ভাড়া দেন বলে জানান।
ওই দোকান দুটি দুই ফল ব্যবসায়ী আনুমানিক ৪ মাস আগে ভাড়া নেন। কিন্তু তারা দোকানের সামনের অংশ যাত্রী ছাউনি পুরোপুরি দখল করে ফলের ব্যবসা করছেন এবং দোকান দুটিকে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছেন।
অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী আরও দুটি যাত্রী ছাউনি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ওই দুটি ছাউনির একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্যারেজে সামনে অটোরিকশা মেরামত করতে দেখা গেছে এবং অন্যটি একটি টিভি ফ্রিজের দোকানের সামনে থাকায় দোকানের মালামাল রাখার কারণে যাত্রী বসার মতো কোনো পরিবেশ নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এ ছাড়াও আকবরনগর-মিরারচর বাসস্ট্যান্ডের দুটি যাত্রী ছাউনির মধ্যে একটি ছাউনির সামনে একটি নার্সারির গাছ রাখা হয়েছে এবং অপরটির সামনে একটি পিঠার দোকান রয়েছে। ফলে যাত্রীদের বসার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লিটন মিয়া জানান, কালিকাপ্রসাদ বাসস্ট্যান্ডের একটি যাত্রী ছাউনি দীর্ঘ চল্লিশ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। ছাউনিটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। সেখানে আগে চা স্টল ছিল। পরে তিনি ছাউনিটি সংস্কার করেন। ছাউনির পেছনের সাইডে দুটি দোকান রয়েছে। ওই দোকানগুলো মূলত ভাড়া দেওয়া হয়েছে দুইজন ফল ব্যবসায়ীর কাছে। বৃষ্টির কারণে তারা কয়েকদিন ধরে দোকানের সামনের অংশ ছাউনিতে ফলের দোকান সাজিয়েছে বসেছে। এ বিষয়ে তিনি দুই ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলবেন তারা যেন দোকানের ভেতরে তাদের ব্যবসা সীমাবদ্ধ রাখেন।
মন্তব্য করুন