রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গরু-ছাগলের সঙ্গে কাটছে বন্যার্তদের নির্ঘুম রাত

বসতঘরে গবাদি পশু নিয়ে একত্রে বসবাস বানভাসীদের। ছবি : কালবেলা
বসতঘরে গবাদি পশু নিয়ে একত্রে বসবাস বানভাসীদের। ছবি : কালবেলা

দূর থেকে দেখা যায় কয়েকটি বাড়ি পানিতে ভাসছে। বোঝা যায় এটা কোনো দ্বীপচর কিন্তু মাটির দেখা নেই। কাছে গেলেও বোঝা যায় না এসব বাড়িতে কেউ বসবাস করছে। নৌকা নিয়ে বাড়ির উঠানে গেলে দেখা যায়, গরু-ছাগলের সঙ্গে একত্রে বাস করছেন বাড়ির সদস্যরা। শুক্রবার (৫ জুলাই) কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জে গিয়ে এ পরিস্থিতির দেখা মেলে।

সরজমিনে দেখা যায়, সবুরা খাতুন (৫৫) কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বতুয়াতলি গ্রামে বাস করছেন স্বামী সন্তান নিয়ে। পাশে আরও দুটি মহিলা। জিজ্ঞেস করলে জানান, একজন মেয়ে আরেকজন ছেলের বউ। স্বামী খাবারের সন্ধানে গেছে হাটে আর সন্তান কাজের সন্ধানে বাইরে আছে। খড় আর প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া, বেড়া ছাড়া উঁচু ঢিবিতে একটা ভাঙা খাট বিছিয়ে গত ৮ দিন থেকে কোনো মতে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। এক খাটে ৮ সদস্যের পরিবার কীভাবে ঘুমায়? পাশেই আবার কয়েকটি ছাগল এবং রান্নার চুলা আর হাঁড়ি পাতিল। শৌচাগার আর টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় পড়েছেন আরও চরম বিপাকে। প্রায় আধা ঘণ্টার নদীপথ পাড়ি দিয়ে বেগমগঞ্জ থেকে পানি আনতে হয়।

এমন চিত্র শুধু সবুরা বেগমের নয়, পুরো কুড়িগ্রাম জেলার প্রায় দুই লাখ মানুষের। তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার কিছুটা শান্ত মেজাজে থাকলেও ব্রহ্মপুত্র যেন তার ভয়ংকর রূপ প্রদর্শন করছে। চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর আর উলিপুরের হাজার হাজার বাড়িতে পানি উঠেছে। বিশেষ করে রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের চার সাজাই, পাইকান্টারী, শংকর মাধবপুর, দক্ষিণ চরসাজাই, উত্তর কোদালকাটি, মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ভেলামারী, বড়বেড়, নাওসালা, শিকারপুর, চরনেওয়াজী, নয়াচর, রাজিবপুর সদরের মুন্সিপাড়া, টাঙ্গালিয়া পাড়া, রৌমারী উপজেলার টাপুরচর, কাজাইকাটা, বকবান্ধা, খেওয়ারচর এবং চিলমারীর অষ্টমীরচর, নয়ারহাট, রমনার প্রায় সব বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। রাস্তা ঘাট ডুবে যাওয়ায় নৌকাই হচ্ছে তাদের চলাচলের একমাত্র অবলম্বন।

সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাবে। এ ছাড়াও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পানি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলা প্রশানের হিসেব অনুযায়ী প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল আরিফ জানান, এরইমধ্যে ৯০ টন চাল এবং ৩ হাজার ২৬৭ প্যাকেট শুকনো খাবার বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৫০০ টন চাল ও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা ইউএনও ও চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। বন্যার্তদের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এসব গাছ থাকলে বর্ষার মৌসুমেও বাড়িতে আসবে না সাপ

ঢাকায় চাকরি দিচ্ছে প্রাণ-আরএফএল

আজও চলছে ঢাবি শিক্ষকদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি 

নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত বেড়ে ৬

যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী 

হঠাৎ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ওবায়দুল কাদের

সিএসআরএমে জব সার্কুলার, আবেদন করুন শুধু পুরুষরা

জাপান বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত বন্ধু : রেলমন্ত্রী 

ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অপসারণ করল মন্ত্রণালয়

জয়ার বারান্দায় মিষ্টি আলুর চাষ 

১০

সেমির আগে মার্তিনেজের আবেগঘন বার্তা

১১

ছাত্রলীগ সেক্রেটারির বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৮

১২

ব্রাজিল ফুটবলের লজ্জার রাতের এক দশক আজ

১৩

ট্রেনের আসন সংখ্যা কমানোর প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন

১৪

সৈয়দপুর রেলস্টেশন / দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি লুপ লাইনের কাজ

১৫

কোটা আন্দোলন / ট্রেন আটকে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’

১৬

ইরানের ভবিষ্যৎ ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে!

১৭

মাটির নিচে পরিত্যক্ত অবস্থায় গ্রেনেডের সন্ধান

১৮

বৈশাখীতে ‘শিকারি’

১৯

পদ্মা তীর রক্ষা বাঁধে ধস, আতংকে এলাকাবাসী

২০
X