প্রতিদিন সকাল থেকে দোকানের চারপাশে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় শুরু হয়। কেউ বলেন, ‘আমাকে ৮টা পুরি দাও’, কেউ বলেন, ‘আমাকে ১০টা পুরি পার্সেল করে দাও’। ‘দিচ্ছি ‘দিচ্ছি’ বলতে বলতে ক্রেতাদের সামনে দুই হাত আর মুখ চলে ৫৪ বছর বয়সি জুলহাজ হোসেনের। ডালপুরি বিক্রি করেই চলে তার ১৩ সদস্যের সংসার।
১৯৮৮ সালে প্রতি পিস ডালপুরি ৫০ পয়সা করে বিক্রি শুরু করেন এই বিক্রেতা। আস্তে আস্তে দাম বাড়তে বাড়তে এখন এই ডালপুরির দাম হয়েছে ১০ টাকা।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার নতুন বাজার বড় মসজিদের বাম পাশে জুলহাজের দোকান। তার বাড়ি পৌরসভার রেলস্টেশন চত্বর এলাকায়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দোকানটি খোলা থাকে। ডালপুরির এ দোকানটি বেশ পরিচিতি পেয়েছে। সেই সঙ্গে বিক্রিও বেশ ভালো। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এই দোকানে ডালপুরি খেতে আসেন। ডালপুরির সঙ্গে জুলহাজ হোসেন ক্রেতাদের প্লেটে তুলে দেন মজাদার তেঁতুলের সস। দোকানের কাজে তাকে সহযোগিতার জন্য রয়েছেন পাঁচজন কর্মচারী।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ১০০০ থেকে ১৫০০ ডালপুরি বিক্রি করেন জুলহাজ হোসেন। তবে শুক্রবার তার দোকান সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে বন্ধ থাকে। প্রতিটি ডালপুরির দাম ১০ টাকা। আয় বাড়াতে ডালপুরির পাশাপাশি তিনি পরোটা ও রোল বিক্রি করেন। প্রতিদিন তিনি প্রায় ১৫ হাজার টাকার বেশি ডালপুরি বিক্রি করেন। খরচ বাদ দিয়ে তার মোটামুটি লাভ থাকে। লাভের টাকায় ১৩ জন লোকের সংসার চালান জুলহাজ হোসেন।
জুলহাজ হোসেন জানান, ডালপুরি তৈরি ও সুস্বাদু করতে আদা, রসুন, মসলা, টেস্টি লবণ ও জিরা ব্যবহার করেন তিনি।
জুলহাজ হোসেনের দোকানে ডালপুরি খেতে এসেছেন একইর মঙ্গলপুর গ্রামের বুলবুলি বেগম। তিনি বলেন, আমরা বিরামপুর এলে জুলহাজ ভাইয়ের দোকানে ডালপুরি খাই। ডালপুরি ও ডালপুরির সঙ্গে যে সস দেওয়া হয় তা খুবই মজাদার।
বিরামপুরের পাশের উপজেলা নবাবগঞ্জ থেকে আসা সিরাজুল চৌধুরী বলেন, বিরামপুরে ডালপুরি খেতে আসছি। ডালপুরির সঙ্গে সসও খুব মজা হয়েছে। বিরামপুরে যতবার আসি এই দোকানে ডালপুরি না খেয়ে যাই না। দোকানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, তাই ডালপুরি খেতে আরও ভালো লাগে।
বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী সরকার টুটুল বলেন, জুলহাজ হোসেনের দোকানে ডালপুরি খেতে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন আসেন। এলাকায় ডালপুরির বেশ সুনাম রয়েছে। মাঝে মাঝে আমিও ডালপুরি খেয়ে বাসার জন্য নিয়ে যাই।
মন্তব্য করুন