ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে এবার কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে পাটচাষিরা পানি ও জলাশয়ের অভাবে পাটের সোনালি আঁশ ছাড়ানোর জন্য পাট পচানোর জাগ দিতে পারছেন না। পাট কাটার সময় হলেও চাষিরা বৃষ্টির আশায় পাট কেটে অনেকেই জমিতে, রাস্তার পাশে স্তূপ করে রেখেছেন। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এমন চিত্র দেখা গেছে। অনেকে আবার পানির আশায় পাট কাটা থেকে বিরত আছেন। ৫নং হরিপুর ইউনিয়নের হারিপাড়া গ্রামের সোমসের আলী বলেন, ২ বিঘা জমিতে এ বছরও পাটচাষ করেছি, এখনো কাটিনি। পাট জাগ দেওয়ার জন্য পানির জায়গা খোঁজ করলেও কোথাও তা পাচ্ছি না। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
৬নং ভাতুরিয়া ইউনিয়নের মফিজুর বলেন, আমার পাটের আবাদ এবার ভালো হয়েছে কিন্তু পাট কেটে তা পচানোর মতো জায়গা ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নেই। তাই বিপাকে পড়েছি ।
মারুফ আলী নামে অন্য এক কৃষক বলেন, পাট জাগ দিতে যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয় বর্তমানে খাল-বিলে তার ছিটেফোঁটাও নেই। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলেও তা মুহূর্তের মধ্যে শুকিয়ে যায়। পুকুর, খাল, বিলেও পানি একেবারে তোলানিতে পড়ে রয়েছে। অনেকে আবার জলাশয়ে মাছ চাষের কারণে ওসব জায়গায় পাট পচাতে দিচ্ছেন না।
হরিপুর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রুবেল হোসেন বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ উপজেলায় ৬ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দেশি ১৪০ হেক্টর আর তোষা ৪৯০ হেক্টর। ৬টি ইউনিয়নে ১০টি প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। ওইসব জায়গায় বিনামূল্যে পাটের বীজসহ সার প্রদান করা হয়েছে। দেশি পাট প্রতি হেক্টরে ফলন হতে পারে ৮ দশমিক ৫ বেল্ট আর তোষা পাট হবে প্রতি হেক্টরে ১০ দশমিক ৫ বেল্ট। পাট আবাদ করতে প্রতি হেক্টরে খরচ হয় প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকায় পাট বেশ লম্বা ও আঁশ মোটা হয়েছে। পাট পচানোর জন্য আমরা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর জন্য চাষিদের পরার্মশ দেওয়া হচ্ছে।মন্তব্য করুন