ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে পাকা-কাঁচা স্থাপনা। উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে কালিদাস পাহালিয়া নদীর পূর্ব পাশে লেমুয়া বাজারের প্রধান সড়কের পাশের জায়গা দখল করে স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যু যেন স্থাপনা নির্মাণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করার পরও নেওয়া হয়নি কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, যেন তাদের নীরব সম্মতিতেই চলছে সরকারি ভূমি দখলযজ্ঞ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার লেমুয়া বাজারের প্রধান সড়কের পাশে রুবেল নামে এক প্রভাবশালীর নেতৃত্বে পাউবোর জায়গা দখল করে সেখানে বর্তমানে কয়েকটি পাকা দোকানঘর নির্মাণের কাজ চলছে। তড়িঘড়ি স্থাপনা নির্মাণে দিনের পাশাপাশি রাতেও চলছে নির্মাণকাজ। নির্মাণ করা হয়েছে বহুতল ভবনও। কয়েকটি নতুন নির্মিত পাকা দোকানঘর বানানোর কাজ। দোকানে চলাচলের সুবিধার্থে সড়ক ঘেঁষে বানানো হয়েছে সিঁড়ি। এ ছাড়া সড়কের দুই পাশ দখল করে বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনিতে নির্মাণ করা বেশ কয়েকটি দোকানঘরের পাশাপাশি নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন নতুন দোকানঘর।
অবৈধ দখলদার আবদুল মান্নান, রুবেল মিয়া, চৌধুরী প্লাজার আক্তার মিয়া, জাহাঙ্গীর হার্ডওয়্যার, আলমগীর হার্ডওয়্যার, সেলিম ভূঞা, তাজুল ভূঞা, সবুজ মিয়া ফার্নিচার দোকানসহ শতাধিক অবৈধ দোকানপাট ও স্থায়ী বহুতল স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, পাউবো কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে কেউ কখনও কর্ণপাতও করেনি। ধারণা করা হচ্ছে- পাউবো লোকজনের সঙ্গে অবৈধ যোগসাজশে দিনরাতে স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল মান্নান বলেন, এগুলো আমাদের নিজস্ব সম্পত্তি। আমরা বহুদিন ধরে এখানে দোকান করে ব্যবসা করে আসছি। তবে তাদের পক্ষে কোনো কাগজপত্র বা প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেননি।
লেমুয়া বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সহসভাপতি খায়ের উদ্দিন বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে বাজারের এসব অবৈধ দোকানপাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করলে স্থানীয়ভাবে ম্যানেজের মাধ্যমে ওই সময় উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। বর্তমানে পুনরায় পাউবোর জায়গায় রুবেলের নেতৃত্বে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা মোটেও ঠিক হচ্ছে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মাসুদ বলেন, নদীর মধ্যে অবৈধভাবে দখল করে দেয়াল নির্মাণ ও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। ভূমিদস্যুরা দীর্ঘদিন ধরে পাউবোর লোকজনকে ম্যানেজ করে এসব কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে শোনা যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আহমেদ বলেন, আমরা বিষয়টি আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছ থেকে জানতে পেরেছি। বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য লোক পাঠানো হচ্ছে।
মন্তব্য করুন