বগুড়ার গাবতলীতে বৈদ্যুতিক মোটর ছাড়াই পাইপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ থেকে অবিরাম পানি উঠছে। মাটির নিচে ২৬০ ফুট গভীর থেকে অবিরামভাবে এমন পানি ওঠায় এলাকায় শত শত মানুষ সেখানে ভিড় জমাচ্ছে। অনেকেই এই পানিকে ‘অলৌকিক’ মনে করে রোগ ব্যাধি নির্মূলে বোতলে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন। কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না পানিপ্রবাহ।
গত ২৫ জুন বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের বুরুজ মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত জোব্বার আলীর ছেলে অবসরপ্রাপ্ত জেল পুলিশ কর্মকর্তা জাবেদ আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ১১ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো পানি ওঠা বন্ধ হয়নি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ২৫ জুন সকালে জাবেদ আলী তার বাড়িতে টিউবওয়েল মিস্ত্রী হারেজকে দিয়ে সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর কাজ করান। সেখানে চার ইঞ্চি ব্যাসের ২৬০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ বসানো হয়। পরে সাবমার্সিবল পাম্প নামিয়ে চালু করার কিছুক্ষণ পর বিদ্যুৎ চলে যায়। বেলা ১১টায় দিকে কিছুক্ষণ পানি তোলার পর বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিলে একইভাবে পাইপ দিয়ে অবিরাম পানি উঠতে থাকে।
একপর্যায়ে গত ২৮ জুন সকালে সাবমার্সিবল পাম্প তুলে নিলেও ওই পাইপ দিয়ে অনবরত পানি আসতে দেখা যায়। এ খবর চারপাশে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী পানি উঠার দৃশ্য এক নজর দেখার জন্য ভিড় জমাতে থাকে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী জানায়, গ্যাস থেকে অলৌকিকভাবে পানি উঠতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাফর মিয়া পানি নিতে এসে বলেন, শরীরে রোগ ব্যাধি ভালো হতে পারে এ আশায় পানি পান করছেন। বাকিটা আল্লাহ সহায়।
বাড়ির মালিক জাবেদ মিয়ার ভাতিজা মাসুদুল আলম রিপন বলেন, এ ঘটনায় আমরা চিন্তিত। পানি ওঠার ঘটনা দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসছেন। তবে এটা কোনো অলৌকিক ঘটনা নয়। এসব মানুষের গুজব।
তিনি বলেন, পানি সম্পদ বিভাগ থেকে লোক এসেছিলেন। তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন মূলত গ্যাসের কারণে এমনটা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, মাটি পানি অথবা গ্যাসের চাপের কারণে এমনটা হতে পারে। তবে এখানে আগুন ধরার মতো ঘটনা আছে। এজন্য গ্যাসের চাপও বলা যেতে পারে।
তিনি বলেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্লেষণ করা যায় না। তারপরও যদি আমি বৈজ্ঞানিক বা প্রযুক্তিগতভাবে বলি, তাহলে মাটির নিচের কোনো চাপে এমনটা হচ্ছে। বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এরইমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরে করণীয় সর্ম্পকে নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন