ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে অজ্ঞাতপরিচয় এক মা পাঁচদিন বয়সী এক নবজাতক শিশুকন্যাকে ফেলে পালিয়ে গেছেন। শিশুটিকে হাসপাতালের শেখ রাসেল স্ক্যানু নবজাতক সেবাকেন্দ্রে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাজ্জাদ হায়দার শাহীন জানান, বর্তমানে শিশুটি সুস্থ আছে। মায়ের বুকের দুধ পান না করালে শিশুটির স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহী বাপ্পি ইসলাম বলেন, এই ওয়ার্ডে অনেক শিশু সদ্য জন্ম নিয়েছে। তাঁদের মায়েদের আমরা ও চিকিৎসক শত অনুরোধ করেও এক ফোঁটা দুধ পান করাতে পারিনি বাচ্চাটিকে। এরইমধ্যে আমার স্ত্রী শিশুটিকে গুঁড়া দুধ খাওয়াচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, গত তিনদিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসি। এ সময় জানতে পারি একজন মা নবজাতক রেখে চলে গেছেন। এই সংবাদ পেয়ে আমরা সেখানে ছুটে যাই। তখন থেকে হাসপাতালে থেকে শিশুটির দেখভাল করছি।
শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, সোমবার (১ জুলাই) সকালে গোলাপী নামে এক নারী ওই শিশুর শ্বাসকষ্ট উল্লেখ করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তার কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে রেখে মা চলে যান।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রকিবুল আলম বলেন, ভর্তির কাগজে ওই নারী পঞ্চগড় সদরের ময়দান দিঘি গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করে হাসপাতালে ভর্তি হলেও সেখানে এই ঠিকানায় কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি থানায় জানানো হয়। বর্তমানে বাচ্চাটি সদর থানা পুলিশ ও জেলার সমাজসেবার তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি এবি এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, শিশুটির পরিবারকে অনেক খোঁজার পরেও সন্ধান মেলেনি। এখন দত্তক নিতে অনেকে আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসকের একটি কমিটির মাধ্যমে শিশুটিকে দত্তক দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, শিশুটির অভিভাবক খোঁজা হচ্ছে। তবে কোনো অভিভাবক খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে অনেকে আবেদন করেছে। আবেদনপত্র যাচাই করে শিশুটিকে একটি সুরক্ষিত পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন