রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৪ পিএম
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তৃতীয় সন্তানও মেয়ে, বিক্রি করে দিলেন বাবা

মায়ের কোলে দেওয়া হয় বিক্রি হওয়া শিশুকে। ছবি : কালবেলা
মায়ের কোলে দেওয়া হয় বিক্রি হওয়া শিশুকে। ছবি : কালবেলা

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় মায়ের কোলে ফিরল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় টাকার বিনিময়ে দত্তক দেওয়া সেই নবজাতক কন্যা শিশুটি।

বুধবার (৩ জুলাই) স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে মরিয়মনগর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু এবং স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূর উল্লাহর উপস্থিতিতে কন্যা শিশুটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কুলালপাড়া গ্রামের সিএনজি অটোরিকশাচালক মো. সাদ্দাম ও স্ত্রী সুমি আক্তারের সংসারে দুটি কন্যা সন্তানের পর তৃতীয় মেয়ে সন্তান জন্মায়। পুত্রসন্তানের আশায় তৃতীয়বারও কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় অসন্তুষ্ট ছিলেন বাবা সাদ্দাম। পরে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের ১৪ বছরের নিঃসন্তান এক দম্পতিকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে তুলে দেন বাচ্চাটিকে।

চন্দ্রঘোনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে বাচ্চাটিকে তুলে দেওয়ার সময় বিষয়টি দেখেন অন্য এক রোগীকে রক্ত দিতে যাওয়া পারভেজ হোসাইন নামের এক যুবক। তিনি ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে বাচ্চাটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগ নেন স্থানীয়রা।

এই ব্যাপারে মরিয়মনগর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু বলেন, অভাবের কারণে সিএনজি অটোরিকশাচালক সাদ্দাম হাসপাতালের খরচ বাবদ কিছু সুবিধা নিয়ে মেয়েটিকে দত্তক দিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় কয়েকজন মহৎ মানুষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাকাগুলো অনুদান দেন। বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে টাকাগুলো ফিরিয়ে দিয়ে আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে তুলে দিয়েছি। এ সময় ওই দম্পতিকে নগদ টাকা, খাদ্যসামগ্রী উপহার দেওয়া হয়। এমনকি উপস্থিত অনেকে বাচ্চার মুখ দেখে আরও বেশ কিছু নগদ টাকাও উপহার দেন। বাচ্চাটির ভরণপোষণের ব্যাপারে আমরা সব সময় খবরাখবর রাখব।

শিশুটির বাবা মো. সাদ্দাম বলেন, হাসপাতালের বিল এসেছে ১২ হাজার। ওষুধ খরচ এবং চিকিৎসকের বিল বাবদ আরও ১০ হাজার টাকা লেগেছে, যা আমার কাছে ছিল না। আমার আরও দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তৃতীয়টাও কন্যাসন্তান হওয়ায় বাধ্য হয়ে চিকিৎসা খরচ জোগাতে বাচ্চাকে খরচের বিনিময়ে নিঃসন্তান আত্মীয়কে দিয়েছি। এখন বাচ্চাকে ফেরত পেয়ে আমি অনেক খুশি। সবাই দোয়া করবেন, তাকে মানুষের মতো মানুষ করতে পারি।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন রাতে অন্তঃসত্ত্বা সুমি ভর্তি হন চন্দ্রঘোনা জেনারেল হাসপাতালে। ২৯ জুন দুপুরে সিজারের মাধ্যমে কন্যাসন্তান জন্ম দেন তিনি। চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (২ জুন) বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু ছাড়পত্র পেয়ে নবজাতক শিশুটির মায়ের কোল বাদ দিয়ে ঠাঁই হয় দত্তক মা-বাবার কোলে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় এবং ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় অবশেষে নিজ মায়ের কোলে ফিরল নবজাতক শিশুটি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ছয়টি পয়েন্টে ১০৬২ মিটার ঝুঁকিপূর্ণ

বেলাবতে চায়না কারখানায় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬

ক্রুসকে অবসরে পাঠিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন

তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ, শতাধিক বসতভিটা বিলীন

কোটার বিরুদ্ধে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

কোটাবিরোধী আন্দোলন / ক্লাস বর্জনের ডাক দিচ্ছে জবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা 

ওয়ান বাংলাদেশের সন্মিলনে জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গঠনের প্রত্যয়

দাবাকে ভালোবেসে, দাবার কোর্টেই প্রাণ

নিষিদ্ধ ভয়ংকর অস্ত্র বানাচ্ছেন পুতিন, টার্গেট কে?

চিনিকলের আধুনিকায়নে সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ এস আলম গ্রুপের

১০

আ.লীগ নেতা বাবুল হত্যা, বাঘার পৌর মেয়র ঢাকায় গ্রেপ্তার 

১১

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর

১২

মহাকাশেও থামানো যাচ্ছে না ইরানকে

১৩

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সমর্থনে বাকবিশিস’র মানববন্ধন 

১৪

ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি দাখিল শিক্ষামন্ত্রীর

১৫

পদ্মা সেতুর জন্য বাংলাদেশ বিশ্বে সম্মান পেয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

১৬

কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পর্শে দুই বোনসহ তিনজন নিহত

১৭

বৈঠক ব্যর্থ, নতুন করে যে ঘোষণা দিল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নেতারা

১৮

বিমান থেকে পড়েও বেঁচে গেছেন যে ভাগ্যবান নারী

১৯

ছাত্রছাত্রীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার আহ্বান প্রতিমন্ত্রী রিমির

২০
X