চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন কাটছে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাকা-আধাপাকা গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। অনেক এলাকায় পুকুর ডুবে লক্ষাধিক টাকার মাছ চলে গেছে।
মিরসরাই পৌরসভা, খৈয়াছড়া ইউনিয়ন, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন, করেরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন নিচু গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে ফেনাপুনি, সোনাপাহাড় গ্রামের কয়েকশত পরিবার। অনেক পরিবারের চুলায় পানি ওঠায় রান্নাও করতে পারছে না। এ ছাড়াও খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের ভেণ্ডারপাড়া এলাকায় একটি কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
এদিকে জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সোনাপাহাড় বিশ্বরোড় নূরানি জামে মসজিদ এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পরিবারের সদস্যরা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিচ দিয়ে কয়েকটি ব্রিজ আরশিনগর ফিউচার পার্ক বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এ এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে যায়। এতে করে এখানকার বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়তে হয়।
মিরসরাই পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাজেদুল করিম আসাদ বলেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আমাদের এখানে বারোমাসি একটি খাল ভেঙে বাড়ির উঠানে এবং রাস্তায় পানি উঠে গেছে। এতে করে সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাল পার্শ্ববর্তী হাটবাজারগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ দোকান-পাট ও স্থাপনা। এগুলোর কারণে বিভিন্ন খালে পানিপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটে। ফলে প্রত্যেক বছর নিম্নাঞ্চল এলাকা পানির নিচে ডুবে যায়। এ ছাড়াও অপরিকল্পিতভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ না রেখে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা গড়ে তোলায় প্রতি বছর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউসুফ হারুণ বলেন, আমার নির্বাচনী ওয়ার্ড ফেনাপুনী এলাকায় ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে আমাদের চেয়ারম্যানসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে এসেছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তথ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পাঠাবো।
যোগাযোগ করা হলে খৈয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুন বলেন, মায়ানী ইউনিয়নের আবুতোরাবের ব্রিজের পাশের খালের ওপর অবৈধ স্থাপনার কারণে আমার ইউনিয়নের অনেক আজ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবে না ততক্ষণ আমার ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ কষ্ট করবে।
তিনি বলেন, আমি আমার ইউনিয়নের মেম্বারদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে তাদের একটি তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পাঠিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারি বরাদ্ধ দেওয়ার কথা রয়েছে।
মন্তব্য করুন