নিজ জমিতে স্থাপিত চায়না বেগমের বসতঘর উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাউল সমাজ।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালন আখড়ার সামনে মানববন্ধনে সাধু সমাজের বার্তা লালন অনুসারী চায়না বেগমের স্বামীর সমাধিস্থলেই বসতি গড়ে দিতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
গত ২৬ জুন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামে লালন অনুসারী গাজীর উদ্দিন ফকিরের সমাধিস্থলে স্থাপিত তার স্ত্রী চায়না বেগমের বসতঘর ভেঙে তাকে উচ্ছেদ করেন ওই এলাকার একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী। ওই বিষয়ে চায়না বেগম থানায় অভিযোগ জানালে উভয়পক্ষকে তাকে অন্য জায়গায় ঘর করে দেওয়ার কথা বলা হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত মেনে নেননি চায়না বেগম। ক্ষুব্ধ হন সাধু সমাজও। তারই প্রতিবাদে দুপুরে ফকির লালন সাঁইয়ের আখড়াবাড়িতে মানববন্ধন করেন চায়না বেগমসহ স্থানীয় সাধু সমাজ।
বসতি উচ্ছেদের শিকার লালন ভক্ত চায়না বেগম বলেন, আমার সঙ্গে চরম অন্যায় করেছে এলাকার কিছু খারাপ মনের মানুষ। তারা আমার স্বামীর সমাধির পাশে থাকা বসতি ভেঙে ফেলেছে। এ বিষয়ে থানায় বসাবসি হয়েছিল মীমাংসার জন্য। তবে সমাধান হয়েছে ঠিকই, আমার তা পছন্দ হয়নি। ওরা আমাকে অন্য জায়গায় ঘর করে দিতে চাই। আমি বলেছি, আমার স্বামীর সমাধিস্থলেই আমার বসতি গড়ে দিতে হবে। অন্যথায় মানা হবে না।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া তরুণ ও লালন গবেষক ফকির হৃদয় সাঁই বলেন, সত্য সুপথ চেনার জন্য যারা শুভ্র-সাদা পোশাক পরে ঝোলা কাঁধে নিয়ে সর্বত্যাগী হয়ে মানুষের মানবতাকে জাগ্রত রেখেছেন, আজ সেই আলোকিত মানুষের চোখে জল গড়িয়ে পড়ছে। আমাদের বোধকে জাগ্রত করতে হবে, বাউলরাও মানুষ, তারা পশু নয়। আজ চায়না বেগমের যে করুন দশা, তা আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও হবে। এর জন্য আগে বোধকে জাগ্রত করতে হবে।
পরে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজার কাছে স্মারকলিপি জমা দেন চায়না বেগম ও তার সঙ্গীরা। সেখানেও স্বামীর কবরের পাশেই থাকার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন ওই বৃদ্ধা।
এ সময় জেলা প্রশাসক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, তার ভিটেমাটিতে বাড়ি করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক হিসেবে আমার যতটুকু সহায়তা করার ক্ষমতা রয়েছে, আমি ততটুকু সহায়তা প্রদান করব।
মন্তব্য করুন