সিআইডির তদন্ত দল দেখে দৌড়ে পালালেন সুপারসহ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারফলসি দাখিল মাদ্রাসার ৮ শিক্ষক। মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়ে দুর্নীতির অনুসন্ধানে যায় ঝিনাইদহ সিআইডির এ তদন্ত দল। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঝিনাইদহ সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান এ খবর নিশ্চিত করে জানান, মৃত সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ওই মাদ্রাসায় ১২ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হলে আদালতের নির্দেশে তদন্তে নামে সিআইডি। একাধিকবার ওই মাদ্রাসায় সরজমিন পরিদর্শনে গিয়েও সুপার ইয়ারুল হক সহযোগিতা করেননি। তিনি শিক্ষক নিয়োগের কাগজপত্র দেননি। বরং যতবার সিআইডি’র তদন্ত দল মাদ্রাসায় গিয়েছে ততবারই সুপারসহ শিক্ষকরা পালিয়েছেন।
সিআইডি কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান আরও জানান, বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিতে এনে নতুন করে আদেশ চাওয়া হবে। এ ছাড়া সুপারসহ শিক্ষকদের চিঠি দিয়ে নিয়োগের কাগজপত্র হাজির করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারীকে বলা হয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শী কনক মণ্ডল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির তদন্ত দল মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে খবর পেয়ে সুপার ইয়ারুল হক আগেই পালিয়ে যান। এরপর একে একে শিক্ষক বাবু হোসেন, রুহুল আমিন, মঞ্জুরা খাতুন, মসলেম উদ্দীন, সাইফুর রহমান, খায়রুল ইসলাম ও আবু সালেহ পালিয়ে যান।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারফলসি গ্রামে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০২২ সালের ৬ জুলাই মাদ্রাসাটি রাতারাতি এমপিওভুক্ত হলে বর্তমান ইয়ারুল হক হঠাৎ আর্বিভুত হন সুপার হিসেবে। এরপর দারি করে বসেন প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খলিলুর রহমান তাদের নিয়োগ দিয়ে গেছেন। এ নিয়ে এলাকায় শোরগোল শুরু হলে মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির ছেলে কনক মণ্ডল মামলা করে বসেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি এখন সিআইডি তদন্ত করছে।
মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দপ্তরী হিসেবে দায়িত্ব পালনরত মনজের আলী জানান, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ ১০ বছর বর্তমান সুপার ইয়ারুল হক ছিলেন না। এমপিওভুক্ত হওয়ার পর তিনি রাতারাতি উড়ে এসে জুড়ে বসেন।
দৌড়ে পালানোর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে মাদ্রাসা সুপার ইয়ারুল হক ভুয়া নিয়োগের বিষয়ে বলেন, কোথায় কবে নিয়োগ বোর্ড বসেছিল তা তার এখন মনে নেই।
বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী জানান, সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা মঙ্গলবারের ঘটনাটি তাকে মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন। সিআইডির চিঠি পেলে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন জানান, সিআইডির তদন্ত দল মাদ্রাসায় যাওয়ার আগে তাকে চিঠি দিয়ে জানালে তিনি সভাপতি হিসেবে সুপারসহসব শিক্ষকদের হাজির রাখবেন।
মন্তব্য করুন