আলোচিত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরীকে ওএসডি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১ জুলাই) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সহকারী সচিব এম কে হাসান জাহিদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে ঢাকার মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
অপরদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শেখ কুদরত ই খোদাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
জানা গেছে, ডা. শীতল চৌধুরী পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়। তিনি সপ্তাহে মাত্র দুই দিন অফিস করতেন। কোটি টাকা মূল্যের ব্যক্তিগত গাড়ি কিনেছেন। ডা. শীতল চৌধুরী কয়েকজন স্টাফদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের যোগসাজশে করে লুটপাট করে আসছিলেন। হাসপাতালের স্টাফদের বেতন ছাড়াতে গেলেও টাকা দিতে হয়েছে ওই দুর্নীতিবাজ পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরীকে। ফলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল সাতক্ষীরার মানুষ।
মেডিকেলের ল্যাব, এক্সরে বিভাগ ও কেবিন ভাড়া থেকে প্রতি সপ্তাহে মোটা অঙ্কের টাকা পরিচালকের হাতে দিতে হয়েছে। তা না দিলে বিভাগ পরিবর্তন করে দেওয়ার হুমকি-ধমকিও প্রদর্শন করেন ডা. শীতল চৌধুরী। এ ছাড়া হাসপাতালের ওষুধ কেনার জন্য বরাদ্দ হওয়ায় ৭ কোটি টাকার কোনো ওষুধ না কিনে পুরো টাকাটাই আত্মসাৎ করেছেন। এসব অনিয়মের বিষয়ে পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরীর বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করলে সত্যতা পাওয়া যাবে।
এসব অভিযোগ নিয়ে গত ২৪ জুলাই ২৩ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভূমিহীন সমিতির নেতারা।
এ ছাড়া প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করা হয়। ওই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার ওএসডি হওয়ার খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন ভূমিহীন সমিতির নেতাসহ সাতক্ষীরার সচেতন মহল।
এদিকে, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিসহ অধিকাংশের কল ধরেন না বলে অভিযোগ রয়েছে ডা. শীতল চৌধুরীর বিরুদ্ধে। সরকারি ফোন নম্বরে কেউ কল দিলে সহজেই কল রিসিভ করেন না। আরও অভিযোগ রয়েছে, কেউ একাধিকবার কল দিলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ফোন না ধরার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সেবাপ্রত্যাশীরা। এতে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন জেলার একাধিক সংবাদকর্মী।
মন্তব্য করুন